মীনাক্ষী লেখি। —ফাইল চিত্র।
কয়েক দিন আগেই সংসদে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির দেওয়া ভুয়ো জব কার্ড সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে ফ্যাসাদে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার এবং খোদ মন্ত্রী নিজে। এ বার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষী লেখির হামাস সংক্রান্ত একটি লিখিত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে তৈরি হল রাজনৈতিক চাপানউতোর। রাজনৈতিক মহলের মতে, দু'ক্ষেত্রেই দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের। সেই সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে, মন্ত্রীদের সঙ্গে আমলাদের সমন্বয়ের অভাবের দিকটিও।
লেখির মন্ত্রকে লিখিত প্রশ্নটি গিয়েছিল কংগ্রেসের সাংসদ কে সুধাকরনের কাছ থেকে। প্রশ্নটি ছিল, ভারত হামাসকে জঙ্গিগোষ্ঠী হিসাবে ঘোষণা করেছে কি না এবং এই নিয়ে ইজ়রায়েল সরকার ভারতের উপর চাপ তৈরি করেছে কি না। লোকসভার ওয়েবসাইটে দেখা যায় বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর জবাব রয়েছে। সরাসরি উত্তর না দিয়ে সেখানে তিনি লিখেছেন, 'কোনও সংগঠনকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করার জন্য নির্দিষ্ট আইন (ইউএপিএ) রয়েছে। সেই আইনের ধারাগুলি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সরকার বা মন্ত্রক সংগঠনটি সন্ত্রাসবাদী কি না, তা ঘোষণা করে।'
ঘটনা হল, এই মুহূর্তে বিদেশনীতির দিক থেকে বিষয়টি যথেষ্ট স্পর্শকাতর। লেখি সরাসরি উত্তর না দিলেও, হামাস এবং প্যালেস্টাইন সম্পর্কে ভারতের অবস্থান আরব বিশ্বের আতশকাচের তলায় রয়েছে। তাঁর এই উত্তরটি নিয়েও আন্তর্জাতিক মহলে কাটাছেঁড়ার অবকাশ রয়েছে বুঝতে পেরে সমাজমাধ্যমে লেখি পোস্ট করেন, ‘আপনাদের কাছে ভুল তথ্য গিয়েছে। আমি এমন কোনও প্রশ্নের উত্তর লেখা কাগজে স্বাক্ষর করিনি।’ পোস্টটিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরকে ট্যাগ করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকও ক্ষত মেরামতির স্বরে বলেছে, কোথাও 'টেকনিক্যাল' ত্রুটি হয়েছে।
তবে লেখির এমন দাবির পরে শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘মীনাক্ষী লেখি তাঁর তরফে দেওয়া প্রতিক্রিয়াটিকে অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এমন উত্তরের খসড়া কে লিখল, সে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণা নেই। কেননা তিনি তাতে স্বাক্ষরই করেননি। তাঁর দাবি অনুযায়ী যদি সত্যিই এটা ভুয়ো উত্তর হয়, তা হলে বলতেই হবে গুরুতর কোনও নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে। উনি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।’’
প্রসঙ্গত, ভারতে নিযুক্ত ইজ়রায়েলের রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন হামাসকে জঙ্গিগোষ্ঠী বলে ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানালেও এখনও পর্যন্ত মোদী সরকারের তরফে কোনও সাড়া দেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর এমন ‘ভুয়ো জবাবে’র স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।