ছোটবেলায় সরকারি অফিসারদের ঘরের বাইরে বড় বড় অক্ষরে ছাপা নেমপ্লেট দেখিয়ে প্রিয়ঙ্কাকে তাঁর বাবা বলতেন, বড় হয়ে এ রকমই কোনও অফিসার হতে হবে।
সরকারি চাকরির সামান্য মাইনে পাওয়া বাবা কর্মসূত্রে উত্তরাখণ্ডে থাকতেন। প্রিয়ঙ্কার ছোটবেলাও তাই হরিদ্বারে বেড়ে ওঠা।
বড় হওয়ার সঙ্গে জীবনের দিশা সামান্য বদলে গিয়েছিল প্রিয়ঙ্কা শুক্লর। বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী সরকারি আমলা না হয়ে এমবিবিএস পাশ করে চিকিৎসক হয়ে গিয়েছিলেন। বাবার স্বপ্নের কথা প্রায় ভুলতেই বসেছিলেন।
এই সময়ই একটি প্রশ্ন তাঁকে নিজের সেই ছেলেবেলায় এনে ফেলল। ওই একটি ঘটনাতেই আজ তিনি একজন জনপ্রিয় আইএএস অফিসার।
নেটমাধ্যমে তিনি খুব সক্রিয়। রোজই কিছু না কিছু পোস্ট করেন। শুধু টুইটারেই তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি।
ছোট থেকেই পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছিলেন প্রিয়ঙ্কা। মা-বাবাকে কোনও দিন পড়তে বসার কথা বলতে হয়নি।
২০০৬ সালে লখনউ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছিলেন তিনি।
চিকিৎসক থাকাকালীনই একটি ঘটনা তাঁর জীবনের মোড় বদলে দেয়। এমবিবিএস চিকিৎসক থেকে আইএএস অফিসার হয়ে ওঠেন তিনি।
ডাক্তারিটা খুবই মন দিয়ে করছিলেন প্রিয়ঙ্কা। লখনউয়ের অলিগলিতে ঘুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হত তাঁকে।
লখনউয়ের এক বস্তিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে তিনি দেখেন, এলাকায় অস্বাস্থ্যকর জল পান করছেন এক মহিলা। তিনি ওই জল নিজের শিশুকেও খাওয়াচ্ছেন।
ওই মহিলাকে এমন অস্বাস্থ্যকর জল খেতে এবং শিশুকে খাওয়াতে বারণ করেন প্রিয়ঙ্কা। এর উত্তরে যা এসেছিল তা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। প্রিয়ঙ্কা পরে জানান মহিলার ওই কথাই তাঁকে আইএএস হওয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
ওই মহিলা তাঁকে বলেছিলেন, প্রিয়ঙ্কা তাঁকে এত উপদেশ দেওয়ার কে? জেলাশাসক? না কোনও উচ্চপদস্থ অফিসার? মহিলার প্রশ্নের কোনও উত্তরই ওই দিন দেননি প্রিয়ঙ্কা।
সারা দিন নিজের কাজ করলেও মাথার মধ্যে ঘুরে ফিরে আসছিল মহিলার প্রশ্ন। সে দিন থেকেই আইএএস অফিসার হওয়ার সঙ্কল্প নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
ডাক্তারির পাশাপাশি আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। ২০০৯ সালে আইএএস পরীক্ষাতে উত্তীর্ণও হন তিনি।
এখন ছত্তীসগঢ়ে কর্মরত তিনি। আইএএস হওয়ার দু’বছরের মধ্যে ২০১১ সালে সেনসাস সিলভার পদক পান। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে আরও একটি পুরস্কার পেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা।