পিসি-ভাইপোর মরসুমি জোট ভেঙে গেল!
উত্তরপ্রদেশে মোদীকে ঠেকাতে লোকসভা ভোটের আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে তৈরি হয়েছিল এই মহাজোট। কিন্তু ফলের দিন সকাল থেকেই বোঝা গিয়েছিল, এই পরীক্ষা সফল হয়নি। এর আগে এসপি সূত্রে যা বলা হয়েছিল আজ তা খোলাখুলিই জানিয়ে দিল বিএসপি। উত্তরপ্রদেশে আসন্ন ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে পৃথক ভাবে লড়বেন অখিলেশ সিংহ যাদব এবং মায়াবতী। তার পরেও ২০২২-এর বিধানসভা ভোটেও দু’তরফের আর জোট বাঁধার কোনও সম্ভাবনা নেই।
উত্তরপ্রদেশে ১১ জন বিধায়ক লোকসভায় জিতে এসেছেন। আজ লখনউয়ে বিএসপি-র দলীয় বৈঠকের পর মায়াবতী জানিয়েছেন, তাঁরা সব ক’টি উপনির্বাচনেই একলা লড়বেন। এসপি-র ওপর তাঁদের কোনও ভরসাই নেই আর। আজ এই প্রসঙ্গে নীরবতা বজায় রাখলেও ফলাফলের রাতেই অখিলেশ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন যে তিনি জোট আর রাখবেন না। ঘনিষ্ঠদের কাছে স্বীকার করেছিলেন যে মায়াবতীর উপর ভরসা রেখে তাঁকে বাড়তি আসন দিয়ে তিনি ভুল করেছেন। আজ মায়াবতীর এই সিদ্ধান্তের পর এসপি-র এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘‘ওরা আমাদের সঙ্গে চালাকি করে লোকসভায় শূন্য থেকে ১০টি আসন বানিয়ে নিল। আমাদের সব ভোট মায়াবতীর প্রার্থীর দিকে গিয়েছে। কিন্তু তার উল্টোটা হয়নি। যেখানে বিএসপি প্রার্থী লড়েননি, সেখানে মায়াবতীর ভোট গিয়েছে বিজেপির দিকে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ এই একই ধাঁচের অভিযোগ করেছেন বিএসপি নেত্রীও। আজ মায়াবতী দলীয় বৈঠকে বলেছেন, ‘‘এই জোট সম্পূর্ণ অকাজের ছিল। আমরা এসপি-কে ভোট দিয়েছি, কিন্তু যাদবরা আমাদের ভোট দেয়নি। অখিলেশ পরিবারের ডিম্পল যাদবও যাদবদের ভোট পায়নি। শিবপাল যাদব অখিলেশের ভোট কেটেছেন। যেখানে মুসলমানদের সমর্থন পেয়েছে,
কেবল সেখানেই জিতেছে এসপি।’’ তবে জোট না থাকলেও অখিলেশের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক অটুট থাকবে। কারণ, ‘‘অখিলেশ তাঁর বাবা মুলায়মের মতো নন!’’
আবার অখিলেশও ইতিমধ্যেই নেতাদের বলে দিয়েছেন, একলা চলার জন্য তৈরি হও। হিসেব কষে এসপি দেখেছে, বেশ কিছু আসনে মায়ার দলিত ভোট এসপি প্রার্থীর দিকে যায়নি। কোথায় গেল সেই ভোট? এসপি নেতা কিরণময় নন্দের কথায়, ‘‘বিএসপি ক্যাডারভিত্তিক দল। তাদের ভোটারেরা অগোছালো ভাবে ভোট দেবেন, এমন ভাবার কারণ নেই। কিন্তু ভোট শতাংশ দেখে আমরা বুঝেছি, মায়াবতীর ভোট বিজেপি প্রার্থীর দিকে গিয়েছে!’’ ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন এসপি নেতারা। মায়াবতীর সামনে ঝুলছে আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই তদন্তের জুজু। তিনি তড়িঘড়ি দিল্লি গিয়ে মোদীকে কোনও বার্তা দিচ্ছেন কি না, সেই সন্দেহও রয়েছে এসপি শিবিরে।