মায়াবতী
রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ করার অভিযোগে নিজের দলের সহ-সভাপতিকে পদ থেকে সরিয়ে দিলেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী।
তিন দিন আগেই মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে রাহুল নির্দেশ দিয়েছিলেন, আসন্ন বিধানসভা ভোটে মায়াবতীর সঙ্গে জোট গড়ার প্রস্তুতি শুরু করতে। আর গত কালই বিএসপি-র নবনিযুক্ত সহ সভাপতি এবং জাতীয় সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়প্রকাশ সিংহ ‘বিদেশি’ তকমা তুলে আক্রমণ করে বসেন রাহুলকে।
মায়াবতী অবশ্য এই ঘটনার পর বিশেষ সময় নেননি। আজ সকালেই সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন বিএসপির ‘আদর্শবিরোধী’ রাস্তায় হেঁটে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ করার অপরাধে জয়প্রকাশকে ওই দু’টি দলীয় পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হল। মায়াবতীর কথায়, ‘‘বিএসপির আদর্শবিরোধী কথা বলেছেন জয়প্রকাশ। অন্য দলের নেতৃত্ব সম্পর্কে ব্যক্তিগত কুৎসা করেছেন। তাঁকে অবিলম্বে দু’টি পদ থেকেই বহিষ্কার করা হল।’’
সহ-সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর গত কালই তাঁর প্রথম কর্মী সম্মেলনে জয়প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী পদে মায়াবতীর দাবিকে তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীকে অনেকটাই তাঁর মায়ের মতো দেখতে। বাবার মতো নয়। ওঁর মা এক জন বিদেশিনি। ফলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সফল হতে পারবেন না।’’
আরও পড়ুন: ‘বুড়ো’দের ছেঁটে ফেললেন রাহুল, কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে নবীন মুখের সারি
আজ জয়প্রকাশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে মায়াবতী অবশ্যই জোটের প্রশ্নে ইতিবাচক বার্তা দিলেন। তবে এও ঠিক যে, প্রধানমন্ত্রী পদের প্রত্যাশী দলিত নেত্রী লোকসভা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কোন পথে হাঁটবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মুখে তিনি বিজেপির বিরোধিতা করছেন। জানান, বিজেপি-বিরোধী দলগুলির সঙ্গে তিনি জোট গড়তে প্রস্তুত। কিন্তু তা করতে হবে সম্মানজনক শর্তে। মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়েও তিনি ‘সম্মানজনক’ আসন চাইছেন। এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব তাঁর দলের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দেন, মায়াবতীকে কিছুতেই হাতছাড়া করা চলবে না। সে জন্য মায়া বাড়তি আসন চাইলেও ছাড়তে রাজি এসপি। এমনকি, মায়াবতী প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হলেও আপত্তি নেই। কংগ্রেস সভাপতিও চাইছেন মায়াবতীকে সঙ্গে রেখে এগোতে।
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মত, দর কষাকষির প্রশ্নে চিরকালই কট্টরপন্থী এই দলিত নেত্রী এখনও পর্যন্ত এসপি এবং কংগ্রেসকে চাপে রাখতে চাইছেন। ভোট যত এগিয়ে আসছে মায়ার খেলা ক্রমশ বাড়ছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, বিজেপির তরফ থেকেও সিবিআই জুজু দেখিয়ে মায়াকে জোটের বাইরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দলিত ভোট ভাগ করে দেওয়া গেলে মসৃণ জয় পাবেন না বিরোধীরা।