বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। ছবি: এক্স।
আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় যখন গোটা দেশ উত্তাল, তার মধ্যেই স্কুলে দুই শিশু পড়ুয়াকে নিগ্রহের ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মহারাষ্ট্রের ঠাণে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, পুলিশকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীদের পাথর, রাস্তা-রেল অবরোধের মতো ঘটনায় উত্তাল ঠাণের বদলাপুর।
গত ১৩ অগস্ট একটি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দুই পড়ুয়াকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে স্কুলেরই এক সাফাইকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পর ১৬ অগস্ট গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় স্কুলে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদে শামিল হন অভিভাবকেরা। অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, এমন একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আর স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে গোটা বদলাপুরে বন্ধের ডাক দেন শহরবাসীরা।
তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও রকম পদক্ষেপ করার আগ্রহ দেখাননি। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে দেরি, স্কুলে নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বদলাপুরের রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদে নামেন অভিভাবকেরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আমজনতাও। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে শহরের নানা প্রান্তে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বদলাপুর রেলস্টেশন, রাস্তা বিক্ষোভাকারীরা অবরোধ করেন। সেখান থেকে তাঁদের হটাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়ে বলে অভিযোগ।
ইতিমধ্যেই স্কুলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু ফাঁকফোকর উঠে এসেছে পুলিশি তদন্তে। স্কুলে কোনও মহিলা অ্যাটেন্ড্যান্ট কেন নেই, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও বেশির ভাগই কাজ করে না বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস বদলাপুরের স্কুলের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনারকে এই ঘটনায় মঙ্গলবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট ভোরে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলায় সেমিনার কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রাথমিক ভাবে ওই মামলার তদন্ত চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশ। এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। আপাতত অভিযুক্ত সিবিআই হেফাজতে।