অসমে উদ্বেগে ভিন রাজ্যের বধূরা

জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে (এনআরসি) অসমের অনেক বিবাহিত মহিলার নাম বাদ পড়বে। তা নিয়ে উদ্বেগে সাধারণ মানুষ। চিন্তায় পড়েছেন, যে সব পরিবারের বধূর বাপের বাড়ি ভিন রাজ্যে। এখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনআরসি-র ফর্ম বিলি চলছে। ওই ফর্ম পূরণ করতে গিয়েই সামনে আসছে নানা জটিলতা। তা নিয়ে চলছে বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০২:৫৫
Share:

জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে (এনআরসি) অসমের অনেক বিবাহিত মহিলার নাম বাদ পড়বে। তা নিয়ে উদ্বেগে সাধারণ মানুষ। চিন্তায় পড়েছেন, যে সব পরিবারের বধূর বাপের বাড়ি ভিন রাজ্যে।

Advertisement

এখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনআরসি-র ফর্ম বিলি চলছে। ওই ফর্ম পূরণ করতে গিয়েই সামনে আসছে নানা জটিলতা। তা নিয়ে চলছে বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলন। আজ শিলচরে প্রধান ডাকঘরের সামনে জমায়েত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঠিকানায় একযোগে পোস্টকার্ড পাঠিয়েছে নাগরিকত্ব সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটি। হিন্দিভাষী সমন্বয় মঞ্চের প্রতিনিধিরা গত কাল দিল্লিতে দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে।

ভিন রাজ্য থেকে এসে যে সব নাগরিক অসমে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন, এনআরসি-তে তাঁদের নাম উঠবে না— এই সংক্রান্ত নির্দেশে অনেক পরিবারে দুশ্চিন্তা ছড়িয়েছে। এনআরসি ফর্মে বিবাহিত মহিলাদের কাছেও বাবা বা ঠাকুর্দার ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে অসমে থাকার প্রমাণপত্র চাওয়া হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, তা হলে কি পরিবারের কর্তা ও সন্তানদের নাম নাগরিক পঞ্জীতে থাকবে, অন্য রাজ্যে বিয়ে করেছেন বলে স্ত্রীর নাম বাদ পড়বে? স্পষ্ট জবাব নেই কারও কাছে।

Advertisement

এনআরসি-র ওয়েবসাইটেও প্রশ্নটি তোলা হয়েছে। এক বাক্যে উত্তরও রয়েছে— ‘অন্য রাজ্য থেকে অসমে এসে বসবাসকারীদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’ ফলে ভিন রাজ্য থেকে আসা বধূরা এখন নতুন নির্দেশের অপেক্ষায়।

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অন্য রাজ্য থেকে অসমে এসে বসবাসকারীদের নাম এনআরসি-তে তোলার দাবিতে গত কাল হিন্দিভাষী সমন্বয় মঞ্চের এক প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর হাতে একটি স্মারকলিপিও তুলে দেন। মঞ্চের দুই কর্মকর্তা দিলীপ কুমার ও রাজু মাল্লা রাজনাথকে জানান, অসমে দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে হিন্দিভাষীদের বসবাস। বিশেষ করে চা জনগোষ্ঠীর লোকেরা মূলত কে কোন অঞ্চলের, তা এখন তাঁরা জানেন না।

এ ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু থেকে বহু লোক অসমে গিয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। তাঁদের নাম এনআরসি-তে নাম না তোলার সিদ্ধান্ত অনৈতিক। ভারতের কোনও নাগরিক যে কোনও রাজ্যে গিয়ে বসবাস করতে পারলে, অসমে এনআরসি-তে নাম তোলার ক্ষেত্রে ভিন্ন ব্যবস্থা কেন? এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

একই ইস্যুতে নাগরিকত্ব সুরক্ষা সংগ্রাম কমিটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এ দিন এক হাজারের বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করে পোস্টকার্ডগুলি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে বাংলায় চিঠি লেখা হয়েছে। ভিন রাজ্য থেকে আসা অসমে বসবাসকারীদের নাম এনআরসি-তে তোলার দাবি ছাড়াও তাতে নাগরিকত্ব আইনের ৪ নম্বর ধারায় সারা দেশে একসঙ্গে এনআরসি নবীকরণ করার আর্জিও। এনআরসি নবীকরণের আগে ডি ভোটার ও শরণার্থী সমস্যার সমাধান এবং যে কোনও দলিলকে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি হিসেবে গণ্য করার দাবিও উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement