ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ত্রিপুরায়। চার দিনে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২২ জনের। রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির কারণে ধস নেমে একই সঙ্গে দুই পরিবারের সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মহিলা এবং শিশুরাও। বৃষ্টি থামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলবে। আটটি জেলায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।
গত চার দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে ত্রিপুরায়। এর ফলে একাধিক নদীর জল বেড়ে গিয়েছে। ধলাই, খোয়াই, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা এবং উনকোটির মতো রাজ্যের ছ’টি জেলায় নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছে। বিঘা বিঘা চাষের জমি জলের নীচে। যার ফলে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ত্রিপুরায় বন্যার কারণে প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ বিপর্যস্ত।
রাজ্যের পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে ত্রিপুরায়। বন্যা বিপর্যস্ত এলাকায় খাবার এবং অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে বায়ুসেনা। ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা চিহ্নিত করে সেনার কপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই আগরতলায় পৌঁছেছে আরও বাহিনী।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ত্রিপুরার গোমতী জেলা। এ ছাড়া, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনকোটিতেও ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। রাজ্যের নানা প্রান্তে সাড়ে চারশোর বেশি ত্রাণশিবির গড়ে তোলা হয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ। ত্রাণশিবিরে এই মুহূর্তে ৬৫,৪০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
বৃষ্টির কারণে বার বার ধস নামছে ত্রিপুরায়। তাতে বিপদ আরও বাড়ছে। বন্যার কারণে রাজ্যে ট্রেন পরিষেবা আপাতত বন্ধ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত স্কুল, কলেজ। একাধিক জেলায় টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আশার কথা শোনাতে পারছে না মৌসম ভবন। শুক্রবারও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে একাধিক জেলায়। লাল সতর্কতা জারি রয়েছে শনিবার পর্যন্ত। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি না হলে উদ্ধারকাজও পুরোদমে শুরু করা যাচ্ছে না।