ইস্তাহার প্রকাশ করছেন মনমোহন সিংহ। সোমবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
রাহুল গাঁধীর অনুপস্থিতিতে পঞ্জাবে দলের ইস্তাহার প্রকাশে মনমোহন সিংহকে সামনে নিয়ে এল কংগ্রেস।
মনমোহনকে সামনে রাখার জন্যই আজ ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানটি চণ্ডীগড়ের বদলে দিল্লিতে দলের সদর দফতরে করা হল। সে জন্য দিল্লিতে এলেন রাজ্যে কংগ্রেসের মুখ ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। কংগ্রেসের এক নেতার মতে, ক্যাপ্টেনের এটি শেষ নির্বাচন। আর এ বারের পাঁচ রাজ্যে ভোটের মধ্যে অন্তত পঞ্জাবের ত্রিমুখী লড়াইয়ে দল জিতবে বলেই মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। তাই সে রাজ্যে প্রচারে আরও গতি আনতে মনমোহনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
ইউপিএ জমানায় সনিয়া গাঁধী পরিচালিত জাতীয় উপদেষ্টা পর্ষদের চিঠিগুলি সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রকাশ করার পর তা নিয়ে রাজধানীতে জোর বিতর্ক চলছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে লেখা সনিয়ার চিঠিকে সামনে রেখে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তখন ক্ষমতাকেন্দ্র ছিল সনিয়ার হাতেই। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেস অবশ্য জানিয়েছে, ২০০৬ সালে সনিয়া সাংসদ পদ ও উপদেষ্টা পর্ষদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ফলে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
কিন্তু এই বিতর্কের মাঝেই আজ মনমোহনকে সামনে এনে কংগ্রেস তাঁর রাজনৈতিক ওজনকেই সুকৌশলে ব্যবহার করতে চাইল। শিখ নেতা হিসেবেও মনমোহনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ভোটে কাজে লাগাতে চাইছে দল। যে মনমোহনের ‘মৌনতা’ নিয়ে বিস্তর চর্চা হতো, নোট বাতিলের পর নরেন্দ্র মোদীকে তোপ দাগতে তাঁকেই সামনে নিয়ে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আজ ইস্তাহার প্রকাশের মঞ্চেও মোদীর বিরুদ্ধে নোট বাতিল নিয়ে আর এক দফা খড়্গহস্ত হন মনমোহন। পাশাপাশি ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ভরসা রেখে তাঁর রাজনৈতিক হাত শক্ত করতে চেয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। পঞ্জাবে দলের কোন্দলের জেরে ক্যাপ্টেনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেনি কংগ্রেস। দলের আশা, এই পরিস্থিতিতে ক্যাপ্টেনকে মনমোহনের সমর্থনের সদর্থক প্রভাবই পড়বে পঞ্জাবে।
তা হলে এই নির্বাচনে কি রাহুলের কোনও ছাপই নেই? না মনমোহনকে সামনে তুলে ধরার জন্যই রাহুলের কৌশলী অনুপস্থিতি? রাহুল এখনও পর্যন্ত পুরোদমে পঞ্জাবে প্রচারও শুরু করেননি। ক্যাপ্টেনের দাবি, ‘‘এই ইস্তাহারের গোটাটাই রাহুল গাঁধীর উদ্যোগে তৈরি হয়েছে। কৃষকদের আত্মহত্যা, পঞ্জাবের মাদকের সমস্যা মেটানো নিয়ে রাহুলের ভাবনার ভিত্তিতেই ভোটে লড়ছে দল।’’