ফাইল চিত্র
বিষয় তাঁর অর্থনীতি। কিন্তু রবিবার দিল্লিতে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে যেন বিদেশনীতিরও পাঠ দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। বললেন, ‘‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মকে মেনে নেওয়া যায় না ঠিকই। কিন্তু এটাও ভুললে চলবে না যে, ওরা আমাদের প্রতিবেশী।’’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী যখন এ কথা বললেন, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চে আছড়ে পড়া পাক মর্টার কেড়ে নিয়েছে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের প্রাণ। মনমোহন বলেন, ‘‘অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। এটা ঘটনা যে আমাদের সীমান্ত অসুরক্ষিত, তা সীমান্ত পারের সন্ত্রাসই হোক বা অভ্যন্তরীণ।’’
প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের সঙ্কটে, ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার নীতির বদলে কূটনীতিকে হাতিয়ার করাই বাঞ্ছনীয় বলে পরামর্শ দিয়েছেন মনমোহন সিংহ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তান যে গোটা উপমহাদেশের কাছেই বিপদের কারণ, সে বিষয়ে অবশ্যই তাদের সতর্ক করতে হবে। কিন্তু অযথা আগ্রাসী হওয়া ঠিক নয়।’’ তাঁর কথায়, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আরও বেশি করে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার। কংগ্রেস এই লক্ষ্যেই বরাবর কাজ করে এসেছে।
আরও পড়ুন: বিরোধীরা সবাই চাইলে পেপার ব্যালটে রাজি, জানাল বিজেপি
শুধু পাকিস্তান নয়, সার্বিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই মোদী সরকার ব্যর্থ বলে মনে করছেন মনমোহন। তাঁর কথায়, “এটা আজ খুবই উদ্বেগের ব্যাপার যে— আমরা বিশ্বের বৃহত্ অর্থনীতির দেশগুলোর সঙ্গে, কৌশলগত মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে এবং আমাদের কাছের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক ঘেঁটে ফেলেছি।”
গতকাল প্লেনারির মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্বেষের রাজনীতির অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। এক ধাপ এগিয়ে বিজেপিকে হারানোর জন্য আঞ্চলিক দলগুলোর উদ্ধেশ্যে সনিয়া গাঁধী দিয়েছিলেন জোটবর্তা। আজকে মনমোহন সিং কিন্তু মোদীর সরকারের প্রশাসনিক দিকগুলো নিয়েই সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “মোদী সরকারের কৃষিনীতি ব্যর্থ হয়েছে। আগামী ছয় বছরে কৃষকের উপার্জন দ্বিগুণ করার যে প্রতিশ্রতি দিয়েছেন মোদী, তাও কার্যত অসম্ভব।” মনমোহন বলেন, মোদী সরকার ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রতি দিযেছিল, কিন্তু ২ লক্ষ কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়নি।’’ একই সঙ্গে রাহুল গাঁধীকে ঢালাও সার্টিফিকেট দিয়েছেন মনমোহন। বলেছেন, এই খারাপ অবস্থা কাটিয়ে, রাহুলের নেতৃত্বে এক মাত্র কংগ্রেসই পারে দেশকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যেতে।