হিংসাত্মক ঘটনায় এমনই ছন্নছাড়া অবস্থা মণিপুরের অধিকাংশ অঞ্চলে। ফাইল চিত্র।
মণিপুরে শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চার দিনের জন্য সে রাজ্যে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠক করেছেন একাধিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে। শাহি সফরের মধ্যেই এ বার সে রাজ্যের পুলিশের শীর্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল আইপিএস আধিকারিক পি ডউঙ্গেলকে। তাঁর জায়গায় রাজ্য পুলিশের নতুন ডিজি হিসাবে আনা হল ত্রিপুরা ক্যাডারের আইপিএস আধিকারিক রাজীব সিংহকে। এর আগে সিআরপিএফের আইজি হিসাবে কাজ করছেন রাজীব। গত ২৯ মে মণিপুরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁকে ডেপুটেশনে সে রাজ্যে পাঠানো হয়। এ বার পোড়খাওয়া এই আধিকারিকের হাতেই মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তুলে দিল প্রশাসন। রাজ্য পুলিশের বিদায়ী ডিজিকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে বদলি করা হচ্ছে।
এই রদবদলের মাধ্যমে রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করা গোষ্ঠীগুলির উদ্দেশে কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই প্রশাসনই কড়া বার্তা দিল বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যে হিংসার ঘটনায় লাগাম পরাতে না পারার জন্য রাজ্য প্রশাসন তো বটেই, পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তার পরেই পুলিশের শীর্ষ মহলে এই রদবদলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে তফসিলি জনজাতিও নন, আবার মেইতেইও নন, এমন এক জনকে চাইছিল প্রশাসন। কারণ এই দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে মণিপুরে। তাই ‘নিরপেক্ষ’ এক জনকে পুলিশের ডিজি করে প্রশাসন ভারসাম্যের বার্তা দিতে চাইল বলে মনে করা হচ্ছে।
বুধবারেও মণিপুরের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ‘জঙ্গিদের’ মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দুই তরফ থেকে চলেছে গুলিও। জ্বলেছে ঘরবাড়ি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবার ইম্ফলের ত্রাণ শিবিরগুলিতে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। শিবিরে আশ্রিত কুকি এবং মেইতেই জনজাতির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। মণিপুর সফরের তৃতীয় দিনে রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ। অমিত শাহ বলেন, ‘‘আমাদের সকলের উদ্দেশ্য একটাই। শান্তি এবং সম্প্রীতির পথে মণিপুরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। সংঘর্ষের জেরে যে পরিবারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা যেন শীঘ্রই নিজেদের বাড়ি ফিরতে পারে, তা নজরে রাখতে হবে।’’