প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের নেতারা এই বছরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরে আসার আর্জি জানিয়ে স্মারকপত্র দিলেন। অন্য দিকে, রাজ্যের কুকি যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে স্মারকপত্র দিয়ে বলল, মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী পাঠিয়ে শান্তি ফেরানো যাবে না। পৃথক প্রশাসনই একমাত্র স্থায়ী শান্তি আনতে পারবে। তাই অবিলম্বে জারি হোক রাষ্ট্রপতি শাসন।
শুক্রবার বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া-র তরফে মণিপুরের নেতারা দিল্লিতে প্রতিবাদ জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকপত্র দিয়ে তাঁরা দাবি করেন, হয় নরেন্দ্র মোদী এই বছরের মধ্যে মণিপুরে আসুন, আর তা একান্ত সম্ভব না হলে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার ব্যবস্থা করা হোক। স্মারকপত্রে এ-ও বলা হয়, মণিপুরে শান্তি আনতে হলে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ আবশ্যক। মণিপুরবাসী তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসাম রাইফেলসকে সরিয়ে অতিরিক্ত ৯০ কোম্পানি সিআরপি পাঠানোর কথা জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আইটিএলএফ আজ অমিত শাহকে স্মারকপত্র পাঠিয়ে বলেছে, বাহুবলে স্থায়ীশান্তি আনা যাবে না। রাজ্য এখন আক্ষরিক ভাবেই দ্বিখণ্ডিত। তাই সব রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শান্তি ফেরানোর একমাত্র রাজনৈতিক রাস্তা হল পৃথক প্রশাসন। তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, রাজ্যে সাম্প্রতিক হিংসা ফিরেছে জিরিবামে মার গ্রামে হানাদারির ফলে এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা নেওয়ার বদলে সিআরপি ১০ জন জনজাতি গ্রামরক্ষীকে হত্যা করেছে। তাদের কেউ জঙ্গি ছিল না। আইটিএলএফের সাধারণ সম্পাদক মুয়ান তোম্বিং ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে লেখেন, কুকিরা প্রথম থেকেই রাষ্ট্রপতি শাসন দাবি করছে এবং জানিয়েছে তারা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ করবে না।
২০২৩-২৪ সালের বৃত্তির টাকা এখনও না পাওয়ায় মণিপুরের জনজাতি ছাত্রছাত্রীরা ইম্ফলে রাজভবনের কাছে অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা মিছিল করে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। চলে কাঁদানে গ্যাস। পরে জনজাতি ও পার্বত্য এলাকা উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব এসটি রিথুং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিলেও উত্তেজনা কাটেনি।
জনজাতি শিক্ষার্থী সংগঠন দাবি করে, বড়দিনের আগেই সকলের টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। ট্রাইবাল ইয়ুথ কাউন্সিল মণিপুর জানায়, জনজাতি সংক্রান্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি দফতরে শূন্যপদ পূরণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর থেকে ব্যাপক আন্দোলনশুরু হবে।