মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
নেতা-মন্ত্রী, বিধায়ক, রাজনীতিক এবং আমলাদের নিরাপত্তার বহর আংশিক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মণিপুর সরকার। এর ফলে অতিরিক্ত ২০০০ সেনাকর্মীকে হাতে পাচ্ছে সরকার। মণিপুর প্রশাসন সূত্রে খবর, হিংসা উপদ্রুত অঞ্চলে কৃষকেরা যাতে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই তাঁদের নিরাপত্তায় ওই সেনাকর্মীদের কাজে লাগানো হবে। যদিও সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি।
সম্প্রতি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ জানিয়েছিলেন, চাষের মরসুমে কৃষকদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হবে, যাতে তাঁরা রাজ্যের হিংসা ছড়িয়ে পড়া এলাকায় চাষাবাদ করতে পারেন। সোমবার জাতিহিংসায় বিপর্যস্ত এই রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পর তিনি বলেন, “সরকার ঠিক করেছে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় কৃষকদের আরও নিরাপত্তা দেওয়া হবে।” জেলাগুলি হল কাংপোকপি, চূড়াচাঁদপুর, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম এবং কাকচিং। উল্লেখ্য যে, এই পাঁচ জেলাই রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলগুলির সঙ্গে জুড়েছে ইম্ফল উপত্যকাকে। কৃষক সংগঠনগুলির বক্তব্য ছিল, রাজ্যের সব চেয়ে অশান্ত এই জেলাগুলিতে উপযুক্ত নিরাপত্তা না পেলে, তাদের পক্ষে চাষাবাদের কাজ চালানো সম্ভব নয়। মণিপুরের উপত্যকা অঞ্চলে বাস মূলত মেইতেই জনগোষ্ঠীর। পাহাড়ি অঞ্চলগুলিতে বাস কুকি, জো-সহ অন্য তফসিলি জনজাতি গোষ্ঠীগুলির। মেইতেই এবং কুকিদের বিরোধের জেরেই গত দু’মাস ধরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মণিপুর।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ধারাবাহিক হিংসায় নিহতের সংখ্যা দেড়শো ছুঁতে চলছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ! গত শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক করলেও তার পরেও হিংসার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।