প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
এক জেলা থেকে অন্য জেলায় উড়ে আসছে ক্ষেপণাস্ত্র! আকাশ থেকে আধুনিক ড্রোন ব্যবহার করে চলছে বোমাবর্ষণ! আন্তর্জাতিক যুদ্ধক্ষেত্র নয়, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে নজিরবিহীন এমন সংঘর্ষের পরেও, অন্তত মানবিকতার স্বার্থে একটি বার মণিপুরে আসতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? মণিপুরবাসীর তরফে এমনই আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন মণিপুর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে মেঘচন্দ্র সিংহ।
গত ১৬ মাস ধরে চলা সংঘর্ষে বারবার সমালোচিত হলেও মণিপুরমুখী হননি মোদী। তিন দফায়, মণিপুরের নামমাত্র উল্লেখেই দায় সেরেছেন তিনি। কিন্তু এ বারের চিঠিতে কোনও সমালোচনা নয়, কংগ্রেস লিখল, “মানবিকতার খাতিরে যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যে আসুন। আপনি একটি বার এলে রাজ্যেশান্তি ও স্বাভাবিকতা ফেরানোরশক্তি মিলবে।”
এ দিকে, মণিপুরের বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে বেরিয়েছে, রাজ্য বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছে, তারা যেন ইম্ফলের প্রাসাদোপম বিজেপি সদর দফতর বন্ধ করে দেয়। রাজ্য বিজেপির কর্মকর্তাদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সেই সংবাদ উদ্ধৃত করে জাতীয় কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ লেখেন, ‘মণিপুরে চলছেটা কী? এমন সঙ্কটকালে সেখানে গুয়াহাটিভিত্তিক অস্থায়ী রাজ্যপালকে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। গত ৪৫ দিন ধরে মুখ্যসচিব রাজ্যে নেই’! তিনি আরও লেখেন, ‘স্বয়ম্ভূ প্রধানমন্ত্রীকে ১৬ মাস ধরে মণিপুরে আসার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ফের এক বার কাতর আহ্বান জানালো কংগ্রেস।এ বারেও কি তিনি সেই সাহস দেখাতে পারবেন’?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, মণিপুরের সংঘর্ষ নিয়ে তৈরি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ২০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। জুন মাসে ওই কমিটি গড়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, মণিপুরের মেইতেই এলাকায় ড্রোন থেকে বোমা ফেলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনার তদন্ত চালাবে এনআইএ। ইতিমধ্যে তারা সংঘর্ষ সংক্রান্ত কিছু মামলার তদন্ত চালাচ্ছে।
এর মধ্যেই কুকি বনাম মেইতেই সংঘর্ষের মধ্যেই জটিলতা বাড়াল নাগারা। ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চরমসীমা বেঁধে দিয়ে বলল, ২০১৬ সালে নাগাদের মতামত না নিয়েই হঠকারী ভাবে ৭টি নতুন জেলা গঠন করেছিল সরকার। ১৫ দিনের মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে শুরু হবে তীব্র আন্দোলন। ১৬ মাসের সংঘর্ষে রাজ্যের নাগা অধ্যুষিত ৬ জেলায় আঁচ পড়েনি। এ বার সেখানেও আন্দোলন শুরু হলে নাজেহাল হবে সরকার। কারণ ওই এলাকার দখল রয়েছে শক্তিশালী নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন (আইএম)-এর হাতে। অতীতে নাগাদের দাবি নিয়ে সেখানে ১৩৯ দিন জাতীয় সড়কঅবরোধ চলেছিল।