Biren Singh

জোরালো হচ্ছে ইস্তফার দাবি, তবে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেনকে বিজেপি এখনই সরাচ্ছে না

শুধু কুকি, জ়ো-এর মতো খ্রিস্টান জনজাতি গোষ্ঠীগুলি নয়, মণিপুরে দীর্ঘ আড়াই মাসের হিংসাপর্বে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ‘ভূমিকা’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছে তাঁর স্বজাতি হিন্দু মেইতেইরাও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

ইম্ফল শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ০৯:৩৪
Share:

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। — ফাইল চিত্র।

মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) এবং গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সেই সঙ্গেই আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ইস্তফার সম্ভাবনার কথা। যদিও বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছে, এখনই বীরেনকে সরানোর কথা ভাবা হচ্ছে না। বরং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বীরেনকে পদে রেখেই কুকি-সহ পাহাড়ের জনজাতি গোষ্ঠীগুলির আস্থাবর্ধনের চেষ্টা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নারী নির্যাতনের ওই ঘটনার ৭৭ দিন পরেও পুলিশ কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, তা জানতে বীরেনের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হতে পারে বলে দলের একটি সূত্রের খবর।

Advertisement

শুধু কুকি, জ়ো-এর মতো খ্রিস্টান জনজাতি গোষ্ঠীগুলি নয়, মণিপুরে দীর্ঘ আড়াই মাসের হিংসাপর্বে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ‘ভূমিকা’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছে তাঁর স্বজাতি হিন্দু মেইতেইরাও। কুকি-সহ জনজাতি গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ, গত এক মাসের গোষ্ঠীহিংসার সময়ে বীরেনের সরকারের আচরণ পুরোপুরি পক্ষপাতদুষ্ট। জনজাতি অধ্যুষিত পাহাড় অঞ্চলগুলিতে নিরাপত্তার বিষয়টি মণিপুর সরকার অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ তুলে ওই অঞ্চলে ‘পৃথক প্রশাসনের’ দাবি তুলেছে তারা। অন্য দিকে, রাজধানী ইম্ফল-সহ সমতল এলাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের অভিযোগ, মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালানো কুকি জঙ্গিদের মোকাবিলায় সময়োচিত পদক্ষেপ করেনি বীরেনের পুলিশ।

এই পরিস্থিতিতে বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো হতে পারে বলে কিছু দিন ধরেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মণিপুর সফরের সময়েও বিষয়টি আলোচনায় এসেছিল। প্রভাবশালী বিজেপি বিধায়ক থোংগাম বিশ্বজিৎ সিংহ, রঘুমণি সিংহ-সহ পরিষদীয় দলের অনেকেই বীরেনের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেন দলের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে গত ৩০ জন তাঁর ইস্তফার সম্ভাবনা ঘিরে নতুন ‘নাটক’ দেখা গিয়েছিল ইম্ফলে। পদত্যাগপত্র নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন বীরেন। কিন্তু পথেই সমর্থক এবং অনুগামীদের চাপে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা জানান তিনি। এমনকি, রাজ্যপালের কাছে যে ইস্তফাপত্রটি তিনি পেশ করতে যাচ্ছিলেন, সেটিও ছিঁড়ে ফেলা হয়।

Advertisement

তবে মণিপুরে ধারাবাহিক হিংসা মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য একা বীরেনকে কাঠগড়ায় তোলা যায় না বলেই বিজেপির একাংশ মনে করছে। কারণ, গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত হওয়ার পরেই নিরাপত্তার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল কেন্দ্র। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকের ভার দেওয়া হয় সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহ সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডার হিসাবে কাজ করছেন। কিন্তু মণিপুরে যুযুধান মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এমনকি, কুকিরা পৃথক রাজ্যের দাবিও তুলেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই দাবিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির সহযোগী দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রধান জোরামথাঙ্গা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement