উদ্ধারের পরে মানিক তালুকদার। —নিজস্ব চিত্র।
এ ভাবে আটকে পড়তে পারি, কখনও ভাবিনি! সেই ২০০৭ সাল থেকে এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত। বহু জায়গায় কাজ করেছি। সমস্যা হয়নি। ১২ নভেম্বরও আমরা ৪১ জন সুড়ঙ্গের ভিতরে কাজ করছিলাম। আচমকা ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। সবাই চিন্তায় পড়ে যাই। কী করে এখান থেকে বেরোব!
তার পর থেকে শুরু অপেক্ষা। অনেকে ভয়ে-ভয়ে ছিলেন। কিন্তু সবাই একটা জায়গায় মানসিক ভাবে ঠিক ছিলাম। তা হল, এই জায়গাটা থেকে আমাদের উদ্ধার করা হবে। মনোবল আরও বাড়ে, যখন বাইরে থেকে যোগাযোগ করা হয়। খাবার পেয়েছি নিয়মিত। ওয়াকি টকির মাধ্যমে জানাতে পেরেছি, আমাদের কী প্রয়োজন। কথা বলতে পেরেছি বাড়ির লোকের সঙ্গেও।
আমাদের যার যা প্রয়োজন ছিল, তা পাইপলাইনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাইরে থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। সুড়ঙ্গের ভিতরে কিছুটা কষ্ট হয়েছে। সেখানে তো রাতে ঘুমানো বা স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যাচ্ছিল না। তেমন পরিস্থিতিও ছিল না।
তার মধ্যেই আমরা ব্যবস্থা করে নিয়েছি। আলো ছিল। অনেকেই ছিলাম একসঙ্গে। কারও মন খারাপ হলে, সবাই মিলে গল্প করেছি। সময় অনেক লম্বা মনে হয়েছে। কত ক্ষণে কাটবে সময়, সে কথা মনে হত মাঝে মাঝে। আর বাইরের আকাশ দেখতে খুব ইচ্ছে করত।
আজ সবাই সুস্থ ভাবে বাইরে আসতে পেরেছি। পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভাল লাগছে। এখান থেকেই হাসপাতালে যাচ্ছি। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে ছাড়া হবে। তার পরে, বাড়ি যাব। সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা আমাদের উদ্ধার করলেন। যাঁরা আমাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন, তাঁদেরও অনেক ধন্যবাদ।