যুবরাজ
এ বারের চিত্রকূট মেলায় নাকি একটা চমক আছে। পোশাকআশাক, হাঁড়ি-কলসির সঙ্গে এক সেলিব্রিটিও বিক্রি হচ্ছে! তার দাম নাকি আবার ৯ কোটিরও বেশি! খবর ছড়িয়ে পড়তেই যাকে দেখতে উত্তরপ্রদেশ-মধ্যপ্রদেশ এমনকী দেশ-বিদেশ থেকেও দলে দলে লোক ছুটেছে। একের পর এক ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইটে ঝলসে উঠছে তার মুখ। তবু তাতে কোনও হেলদোল নেই এই সেলেবের। রাজার মেজাজে সামনে সাজানো ফলের ঝুড়ি আর দুধের বালতিতেই বেশ মগ্ন তিনি। নাম যার যুবরাজ, হাবেভাবেও তো সে এমনই হবে!
যুবরাজ আসলে বৃহদাকার এক মোষ। সুপার বাফেলো। দৈর্ঘে ১১ ফুট ৫ ইঞ্চি আর উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি।
কেন্দ্রীয় সরকারি সাহায্যে উত্তরপ্রদেশ আর মধ্যপ্রদেশের সীমানার চিত্রকূটে শুরু হয়েছে গ্রামোদ্দ্যোগ মেলা। সেখানেই যুবরাজকে বেচার জন্য এনেছেন হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রের বাসিন্দা করমবীর সিংহ। তার গলায় ঝোলানো রয়েছে প্রাইস ট্যাগ। যাতে তার দাম লেখা রয়েছে ৯ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। ‘দুধে-ভাতে’ লালিত যুবরাজ করমবীরের পরিবারেরই সদস্য। নিজের বাচ্চার মতোই অত্যন্ত যত্নে বড় করে তুলছেন তাকে। কিন্তু খরচ জোগাতে না পেরে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাকে এই নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তটা নিতে হয়েছে বলে জানান তিনি। তাই মন ভাল নেই করমবীরের।
আরও পড়ুন: অপেক্ষায় মৃত্যু! বুঝেই বাস থামিয়ে দিলেন চালক, বাঁচিয়ে গেলেন যাত্রীদের
তিনি জানান, ৯ বছরের যুবরাজের দেখাশোনাতে কোনও খামতি রাখেননি তিনি। যাতে তার স্বাস্থ্যের কোনও অবনতি না হয় সে জন্য রোজ তাকে ২০ লিটার দুধ, ১০ কিলোগ্রাম আপেল, ৫ কেজি শাক-সব্জি আর ৫ কিলোগ্রাম খড় খাওয়ানো হয়। এমনকী সুস্থ রাখতে রোজ সকালে ৫ কিলোমিটার হাঁটানোও হয়। সব মিলিয়ে রোজ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। যুবরাজের দৌলতে উপার্জনও অবশ্য খুব একটা কম হয় না করমবীরের। তার ‘বীর্য’ বেচে বেশ মোটা টাকাই উপার্জন করেন তিনি। প্রতি ড্রপ ‘বীর্য’ বিক্রি হয় ৫০০ টাকায়। করমবীরের দাবি, ওটা বেচেই বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকা উপার্জন করেন তিনি যুবরাজের মাধ্যমে। কিন্তু, সেই টাকার বেশির ভাগটাই চলে যায় তার দেখভালে। ফলে বাধ্য হয়েই তাকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।