—প্রতীকী চিত্র।
শিশুর বয়স যখন তিন মাস, তখন থেকেই তার হৃদ্যন্ত্র সংক্রান্ত রোগ ধরা পড়েছিল। চিকিৎসকেরা দিল্লির এমস হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। দরিদ্র হলেও শিশুটির বাবা পিছিয়ে যাননি। ছেলের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে যে কোনও মূল্যে টাকা জোগাড় করে এনেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে এমসের দুয়ারে দুয়ারে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে ওই পরিবারটিকে। শিশুটির বয়স এখন ছ’বছর। এখনও অস্ত্রোপচারের ‘ডেট’ দেওয়া হয়নি হাসপাতাল থেকে।
শিশুটির বাবা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যার জন্য এমস হাসপাতাল থেকে অস্ত্রোপচারের কথা বলা হয়েছিল। তার জন্য ৬০ হাজার টাকা এবং সেই সংক্রান্ত কিছু পরীক্ষার জন্য আরও আট হাজার টাকা জোগাড়ও করেছিলেন যুবক। কিন্তু বার বার তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বার বার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে অস্ত্রোপচারের সময়। যুবক জানিয়েছেন, যত বারই তিনি হাসপাতালে গিয়েছেন, তত বারই তাঁকে বলা হয়েছে, এখন অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। কখনও চিকিৎসক ছিলেন না, কখনও আবার শয্যা খালি না থাকার অজুহাতে তাঁকে ফিরতে হয়েছে বলে জানান যুবক।
ওই শিশু বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা। এক বার দিল্লি যেতে পরিবহণ বাবদ তাঁর ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয় বলে দাবি। তিনি একটি মেডিক্যাল স্টোরে সাহায্যকারীর কাজ করেন এবং মাসে আট হাজার টাকা রোজগার করেন। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রবল অর্থসঙ্কটে পড়েছেন যুবক।
সংবাদমাধ্যমে যুবক আরও জানিয়েছেন, তাঁর একটি মাত্র ছেলে। তাকে পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে চান তিনি। জন্মের পরই তার হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা ধরা পড়েছিল। যে কারণে এখনও হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হয় শিশুটির। তার বাবা জানান, ১৫ পা হাঁটলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় তার। এই রোগের কারণে শিশুটির বিকাশেও সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সমস্যার সমাধানের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
যুবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দিল্লি এমস কর্তৃপক্ষ একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কেন শিশুর চিকিৎসায় এত সময় লাগছে, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন এক কর্তা। সাত দিনের মধ্যে ওই কমিটি রিপোর্ট দেবে। তার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।