মমতা নেই গঙ্গার বৈঠকে, নীতীশ কিন্তু মোদীর কাছে

গঙ্গা সাফাই নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত রইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বদলে পশ্চিমবঙ্গের কোনও প্রতিনিধিও ওই বৈঠকে হাজির হননি। তবে বৈঠকে যোগ না দিলেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মমতা। সেই চিঠিতে রাজ্যে গঙ্গার দূষণমুক্তির নানা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫৯
Share:

গঙ্গা সাফাই নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত রইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বদলে পশ্চিমবঙ্গের কোনও প্রতিনিধিও ওই বৈঠকে হাজির হননি। তবে বৈঠকে যোগ না দিলেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মমতা। সেই চিঠিতে রাজ্যে গঙ্গার দূষণমুক্তির নানা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

মোদীর উপস্থিতিতে জাতীয় গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটির আজকের বৈঠকে পাঁচটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয়েছিল। মমতা ও অখিলেশ যাদব বৈঠকে আসেননি। কিন্তু হাজির ছিলেন বিহার, উত্তরাখণ্ড ও ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীরা। বিহারের নীতীশ কুমার শুধু ওই বৈঠকে যোগই দেননি, মোদীর সঙ্গে তিনি আলাদা বৈঠক করেছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীকে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করায় তাদের সঙ্গে জোট ভেঙেছিলেন নীতীশ। আজ সেই নীতীশই মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বিহারের জন্য আরও কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্যের দাবি জানান।

মোদী কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘদিন তাঁকে এড়িয়ে চলেছিলেন মমতা। অবশেষে চলতি মাসে তিনি প্রথম বার নিজের উদ্যোগে দিল্লি গিয়ে মোদীর সঙ্গে দেখা করেন। এর কারণ হিসেবে প্রকাশ্যে রাজ্যের আর্থিক দাবির কথা বলা হলেও অনেকেরই মত ছিল, সারদা তদন্তে দল বেকায়দায় পড়াতেই মোদীর সঙ্গে দেখা করেন মমতা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই বৈঠকের পরেও পুরনো রেওয়াজ মেনে কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে গেলেন না তৃণমূল নেত্রী।

Advertisement

এর আগে নীতি আয়োগ তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে ডেকেছিলেন মোদী। সেখানে যে দু’জন মুখ্যমন্ত্রী অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁদের এক জন মমতা। তবে তিনি সে বার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছিলেন। নীতি আয়োগ তৈরির পর এই সংস্থার পরিচালন পরিষদের বৈঠকেও যাননি মমতা। সেখানেও তিনি রাজ্যের প্রতিনিধিকে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীও নিজে না এসে রাজ্যের প্রতিনিধিকে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রীরাই নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের সদস্য। তাঁদের বদলে অন্য কেউ এই বৈঠকে যোগ দিতে পারেন না। কেরল সেই যুক্তি মেনে নেয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য হিসেবে ওই বৈঠকে গরহাজির থাকে। সেই বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে তিনটি উপ-কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তাদের ধারণা, মমতা আগ্রহ দেখালে এই তিনটির মধ্যে যে কোনও একটি উপ-কমিটির তিনি প্রধান হতে পারতেন। কিন্তু মমতা না আসায় তাঁকে স্বচ্ছতা অভিযান সংক্রান্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। ওই কমিটির কোনও বৈঠক এখনও হয়নি।

পরের পর কেন্দ্রের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর গরহাজিরায় কি আখেরে পশ্চিমবঙ্গেরই ক্ষতি হচ্ছে? তৃণমূলের নেতারা এই যুক্তি মানতে রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, গত ৯ মার্চই সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এই সময় ফের দিল্লি যাওয়াটা অসুবিধাজনক। এত ঘনঘন দিল্লি গেলে রাজ্যের প্রশাসনিক কাজকর্মেও অসুবিধা হতে পারে। পুরভোটের জন্যও মমতাকে প্রস্তুত থাকতে হচ্ছে। আজকের বৈঠকে হাজির না থাকলেও তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যে গঙ্গা দূষণমুক্ত করার জন্য যে সব প্রকল্প রয়েছে, সে বিষয়ে জানিয়েছেন। ওই সব প্রকল্পে অর্থও দাবি করেছেন। আজকের বৈঠকে মোদী জানিয়েছেন, সময় বেঁধে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার কাজ করতে হবে। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও এতে অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement