পটনায় নেই, ইনদওরে আছি, বিভ্রান্তি সিপিএমে

আমন্ত্রণ পেয়ে মমতা, কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, জে়ডি (ইউ)-এর বিদ্রোহী নেতা শরদ যাদব, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব রবিবার পটনায় গিয়েছিলেন।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৪
Share:

ফাইল চিত্র।

বিজেপি-র দাপট রুখতে জোট বেঁধে লড়াইয়ের কথা বলছে তারাও। কিন্তু পটনায় লালুপ্রসাদের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ২০১৯ সালেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে উৎখাতের ডাক দিলেন, সেখানে নেই সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি দলের মধ্যে বাংলা ও কেরল শিবিরের দ্বন্দ্বে জর্জরিত সিপিএম জাতীয় স্তরে তাদের বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ের মাটি দুর্বল করে ফেলছে? দলীয় নেতৃত্বের একাংশও মানছেন, তাঁদের আচরণে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

আমন্ত্রণ পেয়ে মমতা, কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, জে়ডি (ইউ)-এর বিদ্রোহী নেতা শরদ যাদব, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব রবিবার পটনায় গিয়েছিলেন। এমনকী, গাঁধী ময়দানের সমাবেশে হাজির ছিলেন সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতা ডি রাজাও। কিন্তু তাঁরা কেন সেখানে যাননি, তার সহজবোধ্য কোনও কারণ দেখাতে পারছেন না সিপিএম নেতৃত্ব! দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, ‘‘বিজেপি-র বিরোধিতা আমরা অবশ্যই করছি। কিন্তু কোনও মহাজোটে আমরা এখনও নেই।’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশও ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করে নিচ্ছেন, কোনটা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকল্প সন্ধানের চেষ্টা আর কোনটা ভোটের লক্ষ্যে মহাজোট— এই সূক্ষ্মতার বাছবিচার করে তাঁরা অযথা জটিলতা বাড়াচ্ছেন। দিনের শেষে যে কোনও রাজনৈতিক দলেরই লক্ষ্য ভোট। তাই একসঙ্গে সভা করে মহাজোটের কথা না বললেই সেটা ‘পবিত্র’ হয়ে গেল, এমন যুক্তি জনমানসে প্রতিষ্ঠা করা দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে!

Advertisement

লালুর মঞ্চে মমতা ছিলেন বলেই সিপিএম সেখানে যায়নি, কারণটা কিন্তু এমন সোজাসাপটা নয়। কারণ, দিল্লিতে সনিয়া গাঁধীর পৌরোহিত্যে একাধিক বৈঠকে মমতার পাশাপাশিই উপস্থিত থেকেছেন ইয়েচুরি। লালুর দলের সঙ্গেও সিপিএমের সম্পর্ক বহু দিন ধরে সৌহার্দ্যপূর্ণ। তা হলে বিজেপি বিরোধিতার এমন মঞ্চ পটনায় হাতছা়ড়া করা হল কেন? আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার ফাঁকে মঙ্গলবার ইয়েচুরি বলেন, ‘‘পটনার সভার ঘোষণা ছিল, ২০১৯-এর জন্য মহাজোট গড়ে তোলার প্রস্তুতি। এই রকম কোনও মহাজোটে আমাদের থাকার সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনী কৌশলের প্রশ্ন আসবে ভোটের সময়। মহাজোটের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তও হবে পার্টি কংগ্রেসে।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি, এর আগে যত বৈঠকে তৃণমূল-সিপিএম এবং অন্যেরা একত্রে উপস্থিত থেকেছে, তার কোনওটাই মহাজোট গড়ার ঘোষিত লক্ষ্যে হয়নি।

মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌরে আজ, বুধবারই ‘সাঞ্ঝা বিরাসত বাঁচাও মঞ্চে’র সভায় বিরোধী নানা দলের সমাবেশ ঘটতে চলেছে। সেখানে যোগ দিতে যাচ্ছেন ইয়েচুরিও। অথচ পটনায় তাঁর দলের কোনও প্রতিনিধি পাঠানো হয়নি! ইয়েচুরির ব্যাখ্যা, ‘‘ইন্দৌরে যাচ্ছি কারণ, সেখানে মহাজোট গড়ার লক্ষ্যে কোনও সমাবেশ হচ্ছে না। বিজেপি-র মোকাবিলায় একটা বিকল্প পথের সন্ধানের প্রক্রিয়া হিসাবে ওই সমাবেশ হচ্ছে।’’

মহাজোট গড়া আর ওই বিকল্প সন্ধানের ফারাক খুঁজে ফিরছে সিপিএম!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement