বিলগ্নিকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হল কংগ্রেস ও তৃণমূল। আজ বহরমপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারবার বিলগ্নিকরণ হলে আস্তে আস্তে দেশটাই যদি বিলগ্নিকরণ হয়ে যায়, তা হলে কী হবে? দেশের হাতে কী থাকবে?’’
একই প্রশ্ন কংগ্রেসেরও। দলীয় নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা এ দিন টুইট করেন, ‘‘ওরা (মোদী সরকার) কিছু গড়ছেন না, সব বেচে দিচ্ছেন। একে বলে দেশটাকেই বেচে দেওয়া।’’ বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন দাবি করেন, বিলগ্নিকরণে সাময়িক সুরাহা হলেও দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান মিলবে না। বরং বিপদ বাড়বে। দেশ যে আর্থিক ঝিমুনির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তার সমাধান বার করতে প্রধানমন্ত্রীকে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি। প্রয়োজনে সর্বদল বৈঠক ডাকার পরামর্শও দিয়েছেন।
মমতার মতে, ইতিবাচক ভাবনা থেকে কোথাও কোথাও বিভিন্ন সংস্থার সংযুক্তিকরণ হতে পারে। কিন্তু সেটাও কর্মসঙ্কোচন এড়িয়ে করা উচিত। এ প্রসঙ্গে ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের জেরে বাংলা থেকে ইউবিআই-এর সদর দফতর উঠে যাওয়ার যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। অর্ডন্যান্স কারখানার বিলগ্নিকরণ আটকাতে তৃণমূলের আন্দোলনের কথাও উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান রেলওয়ে, ভারত পেট্রোলিয়াম-এর মতো যে সব সংস্থার সঙ্গে দেশের নাম জড়িয়ে রয়েছে, তার বিলগ্নিকরণের তিনি বিরোধী বলে জানান মমতা।
ঐতিহ্যের প্রশ্ন তুলেছেন বীরাপ্পা মইলিও। তিনি মনে করান, জওহরলাল নেহরু ব্রিটিশ সংস্থার জাতীয়করণ করে ভারত পেট্রোলিয়ামের জন্ম দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, এই নবরত্ন সংস্থার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত হৃদয়বিদারক ও পশ্চাৎমুখী।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে মোদী সরকারকে কোণঠাসা করতে কোমর বাঁধছে কংগ্রেস। আর্থিক ঝিমুনি নিয়ে ২৯ নভেম্বর দিল্লিতে একটি সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে তারা। সম্মেলনে থাকবেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, পূর্বতন যোজনা কমিশনের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া, প্রাক্তন অর্থসচিব অরবিন্দ মায়ারাম প্রমুখ। কংগ্রেসের লক্ষ্য, বিরোধী শিবিরের অর্থমন্ত্রী এবং অর্থনীতিবিদদের ছাতার তলায় এনে মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়ানো।