মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
শুক্রবার মন্দির। শনিবার গির্জা। গোয়ায় আড়াই দিনের সফরে গিয়ে হিন্দু এবং ক্যাথলিক মিলিয়ে ৯২ শতাংশ গোয়াবাসীকে বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি আজ যখন ইতালি সফরে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে আলিঙ্গন এবং বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তখন পোপের সঙ্গে দেখা করতে না পারার মনোবেদনা নিয়ে গোয়ায় সরব হলেন মমতা। শনিবার সকালে গোয়ার সবচেয়ে প্রাচীন গির্জা ব্যাসিলিকা অব বম জেসাস-এ গিয়ে সেখানকার ফাদারের সঙ্গে আলাপচারিতায় মমতা তাঁর এই ক্ষোভের কথা বলেছেন।
গত কালই গোয়ার তৃণমূল কর্মীদের সমানে উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন মমতা। দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য গোয়ায় তাঁর পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিজেপি আমাকে কেন রোমে যেতে দিল না? আর কংগ্রেসও তো তখন বলেনি যে, এই কাজটা ঠিক হচ্ছে না। বিশ্ব শান্তি বৈঠকে আমাকে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল। গেলে পোপ-এর সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার অনুমতি দিল না।”
শনিবার পোপের সঙ্গে মোদীর বৈঠক ঘিরে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রশ্ন উঠছে, গোয়াকে বার্তা দেওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ কি না। আর ঠিক সেই সময়েই গির্জায় গিয়ে ফাদার প্যাত্রিসোর সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন মমতা। জানিয়েছেন, মাদার টেরিজার সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গতার কথা। রোমে যাওয়ার আমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। মমতার সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সদ্য তাঁদের দলে যোগ দেওয়া লিয়েন্ডার পেজ ও তাঁর বান্ধবী।
অন্য সব গির্জা ছেড়ে ব্যাসিলিকা অব বম জেসাস-এ মমতার যাওয়ার কারণ তার ইতিহাস এবং ঐতিহ্য। ১৫৯৮ সালে এই গির্জা তৈরির কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ১৬০৫ সালে। চারশো বছরের উপর এই গির্জা একই জায়গায় আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ারের সমাধিও এই গির্জায় সংরক্ষিত রয়েছে। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমাও পেয়েছে গির্জাটি। একে পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের অন্যতম সেরা উদাহরণ হিসাবে ধরা হয়। এ ছাড়াও পর্তুগিজদের তৈরি করা বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একটি হল এই গির্জা।