রাজ্যসভায় গরম। লোকসভায় নরম। পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচনের আগে বিজেপির সঙ্গে আজ এই নরম-গরম পথে হাঁটল তৃণমূল। কাল থেকে সংসদে তৃণমূলের উপস্থিতি ক্রমে শীর্ণ হয়ে আসবে। দলীয় সাংসদেরা ফিরছেন ভোটযুদ্ধে। তার আগে আজ লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীর সওয়া ঘণ্টার বক্তৃতায় এক বারও রা-কাড়তে দেখা যায়নি তৃণমূল সদস্যদের। অন্য দিকে রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা বিষয়ে বলতে উঠে বিজেপি তথা মোদী সরকারকে কড়া আক্রমণ করেছেন দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। পাশাপাশি
সিপিএম এবং কংগ্রেসকে একই বন্ধনীতে রেখে কার্যত নির্বাচনী যুদ্ধই শুরু করে দিলেন এই তৃণমূল নেতা।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আজ সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই লোকসভায় দলের সদস্যদের কাছে নির্দেশ আসে তৃণমূল নেত্রীর— ‘মোদীর বক্তৃতার সময় বিরোধিতা করা যাবে না। এমন কিছু করা হবে না, যাতে প্রধানমন্ত্রী বিরক্ত হন।’ সিপিএমের অভিযোগ, ভোটের আগে মোদীর সঙ্গে সংঘাতে যেতে চাইছেন না মমতা। একে জোটের ধাক্কায় কোণঠাসা মমতা, তার উপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জুজু। ফলে মোদী সম্পর্কে নরম মনোভাব নিতে তিনি বাধ্য।।
তৃণমূলের নেতারা অবশ্য বলছেন, জোট আর কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে চাপ থাকলেও ভোটের আগে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষের কাছে নেতিবাচক বার্তাও দিতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী। দেশ জুড়ে যখন অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিতর্কের গরম হাওয়া বইছে, তখন মোদীর প্রতি প্রকাশ্যেই নরম মনোভাব নেওয়ার অর্থ যে হারাকিরি, সেটা মমতার না-জানার কথা নয়।
রাজ্যসভায় আজ তাঁর বক্তৃতায় নাম না-করে প্রধানমন্ত্রীকে রোমান সম্রাট নিরোর সঙ্গে তুলনা করেছেন ডেরেক। রোম যখন পুড়ছে নিরো বেহালা বাজাচ্ছেন— এই চেনা আখ্যানটি বর্ণনা করে ডেরেক বলেন, ‘‘ভারতীয় নিরো কখন উঠে দাঁড়াবেন?’’ বিজেপির পাশাপাশি সিপিএম ও কংগ্রেসকেও তুলোধোনা করেন ডেরেক।