মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে দিল্লি বিমানবন্দরে স্বাগত জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ। ছবি: পিটিআই।
চার দিনের সফরে ভারতে এলেন মলদ্বীপের প্রেসি়ডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। রবিবার বিকালে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি। মুইজ্জুর সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সাজিদা মহম্মদ। ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে থাকবেন তিনি। গত চার মাসে এটি তাঁর দ্বিতীয় ভারত সফর। যদিও দ্বিপাক্ষিক সফরে এই প্রথম ভারতে এলেন তিনি। এর আগে জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণে আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি। অক্টোবরে চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি, সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ আমলার সঙ্গেও আলোচনায় বসতে পারেন মুইজ্জু।
মলদ্বীপ প্রেসিডেন্টের এ বারের ভারত সফরে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক মহলে। বিশেষ করে গত বছর মুইজ্জু মলদ্বীপের ক্ষমতায় আসার পর থেকে ঘটনাপ্রবাহ যে ভাবে এগিয়েছে, তাতে কৌতূহল আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মলদ্বীপে ক্ষমতায় এসেছিলেন মুইজ্জু। তিনি চিনপন্থী হিসাবে পরিচিত। মলদ্বীপে নির্বাচনের আগে ভারতের বিরুদ্ধে ঢালাও প্রচারও করেছিলেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পর চিন সফরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতে আসেননি। মুইজ্জুর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিক ‘বিতর্ক’ তৈরি হয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছিল ভারতের আমজনতার মনে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর লক্ষদ্বীপ সফরের ছবি নিয়ে মুইজ্জুর মন্ত্রীরা অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। তার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে ‘মলদ্বীপ বয়কট’-এর ডাক তুলেছিলেন ভারতীয় পর্যটকদের একটি বড় অংশ। অভিনয় জগতের বহু ব্যক্তিত্বও সমর্থন দিয়েছিলেন তাতে। ওই সময়ে মলদ্বীপের শয়ে শয়ে টিকিট বাতিল করেছিলেন ভারতের পর্যটকেরা। মলদ্বীপের অর্থনীতির অন্যতম ভিত হল পর্যটন। ভারতীয় পর্যটকেরা মুখ ফেরাতে শুরু করায় বেশ সমস্যায় পড়েছিল দ্বীপরাষ্ট্রটি। মাঝে মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্যও বলেছিল সে দেশের সরকার।
এর মধ্যে সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে মসৃণ করতে সচেষ্ট হয়েছে মলদ্বীপ। মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে এ দেশে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেছিলেন মুইজ্জু। সম্প্রতি ভারতে এসেছিলেন মলদ্বীপের পর্যটনমন্ত্রী ইব্রাহিম ফয়জ়ল। ভারতীয় পর্যটকদের আবার মলদ্বীপ ভ্রমণের আহ্বান জানাতে রোড শো করেছেন এ দেশে।
এরই মধ্যে রবিবার ফের ভারতে এলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক স্তরে পরস্পরের স্বার্থ জড়িত— এমন একাধিক বিষয়ে মোদী এবং মুর্মুর সঙ্গে আলোচনা হতে পারে তাঁর। বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মলদ্বীপ ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে গুরুত্ব দেন, সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।