জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপি মেহবুবা মুফতির জোট সরকারের শরিক। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারই আজ মেহবুবার সরকারের সঙ্গে
লড়াইয়ে নামল।
শোপিয়ানে সেনার গুলিচালনায় নিরীহ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় সেনার মেজর আদিত্য কুমারের নামেই এফআইআর দায়ের করেছিল মেহবুবা মুফতির সরকার। মেজর কুমারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনান্ট কর্ণেল কর্মবীর সিংহ সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। নরেন্দ্র মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দাগল। যার ধাক্কায় সেনা অফিসারদের বিরুদ্ধে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের যাবতীয় তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তার আগে কেন্দ্র ও রাজ্যের আইনজীবীরা একে অন্যকে নিশানা করতে ছাড়েননি।
বিচারপতি দীপক মিশ্র আজ মন্তব্য করেন, ‘‘মেজর আদিত্য কুমার একজন সেনা অফিসার। জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ তাঁর সঙ্গে সাধারণ অপরাধীর মতো ব্যবহার করতে পারে না।’’ জম্মু-কাশ্মীর সরকারের আইনজীবী শেখর নাফাডে প্রশ্ন ছোড়েন, সেনা অফিসাররা কি সব আইনের ঊর্ধ্বে? তাঁদের কি ‘লাইসেন্স টু কিল’ রয়েছে?
কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল পাল্টা যুক্তি দেন, ‘‘কোথায় লাইসেন্স টু কিল? ওখানে তো সেনা জওয়ানেরাই মারা যাচ্ছেন।’’ কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া রাজ্য পুলিশ এ হেন এফআইআর দায়ের করতেই পারে না বলে যুক্তি দেন বেণুগোপাল।
গত ২৭ জানুয়ারি শোপিয়ানে বিক্ষুব্ধ জনতার পাথরের মুখে গুলি চালায় সেনা। দু’জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা নিয়ে এফআইআরেই সেনার কম্যান্ডিং অফিসার হিসেবে মেজর আদিত্য কুমারের নাম ছিল। জম্মু-কাশ্মীর সরকার আজ সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছে, মেজর আদিত্য কুমারের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়নি। মেজর কুমারের বাবা পাল্টা যুক্তি দেন, এফআইআরে ওই দিনের ঘটনার বিবরণে মেজর কুমারের নাম রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, পরে কি অভিযুক্তের তালিকায় মেজর কুমারের নাম আসতে পারে? জম্মু-কাশ্মীরের আইনজীবী যুক্তি দেন, তা তদন্তের উপর নির্ভর করছে। তাতেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, সেনা অফিসারের সঙ্গে সাধারণ অপরাধীর মতো ব্যবহার চলে না।
অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি, সামরিক বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আফস্পা অনুযায়ী উপদ্রুত এলাকায় কোনও সেনা জওয়ানের বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর করতে পারে না। জম্মু-কাশ্মীর সরকারের যুক্তি ছিল, এফআইআর বা চার্জশিট পেশ করতে কেন্দ্রের অনুমতির দরকার নেই। ২৪ এপ্রিল এই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে। শোপিয়ানের ঘটনা নিয়ে বিবাদের আগে মেহবুবা মুফতির সরকার হিন্দুদের সংখ্যালঘু তকমা দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করছে বলে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলেছিল মোদী সরকার।