বস্তায় ভরে উদ্ধার করা হয়েছে ঝলসে যাওয়া দেহগুলি। ছবি: পিটিআই।
গুজরাতের রাজকোটের গেমিং জ়োনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম ধওয়াল ঠক্কর। সোমবার তাঁকে রাজস্থানের আবু রোডে তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেখানে ওই আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন ধওয়াল। গেমিং জ়োনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এই নিয়ে মোট চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ইতিমধ্যে ২৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে ন’টি শিশুও ছিল। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিট গঠন করা হয়েছে। পুলিশ গেমিং জ়োনটির অন্যতম মালিক যুবরাজ সিংহ সোলাঙ্কি, রাহুল রাঠৌড় এবং ম্যানেজার নীতীশ জৈনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি অংশীদারদের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গেমিং জ়োনের ভিতরে থাকা যে বহুতলে আগুন লেগেছিল, সেই বহুতলটি গোটাটাই দাহ্য পদার্থে ঠাসা ছিল। বহুতলের অন্দরসজ্জার জন্য রাবার, রেক্সিন, থার্মোকল এবং ফোমের মতো জিনিস ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে আগুন আরও দ্রুত ছড়াতে সাহায্য করেছি অন্দরসজ্জায় ব্যবহৃত এই জিনিসগুলিই। শুধু তা-ই নয়, ফাইবার এবং কাপড়ও ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ছাড়াও গেমিং জ়োনের মেরামতির কাজ চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সে কারণে যত্রতত্র কাঠ, টিনের শেডও পড়েছিল। ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকেই আগুন লেগেছিল গেমিং জ়োনে। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই গেমিং জ়োনের কোনও ‘ফায়ার লাইসেন্স’ ছিল না। এমনকি, দমকলের ছাড়পত্রও ছিল না তাদের কাছে। তার পরও কী ভাবে ওই গেমিং জ়োন চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কী ভাবে এত দিন কোনও প্রকার অনুমতি ছাড়াই এই গেমিং জ়োন চলছিল, সেই প্রশ্নে গুজরাত হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকার এবং রাজকোট পুরসভাকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজকোটের এই গেমিং জ়োন অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি দিন বেশ ভিড় হত এই জ়োনে। তবে সপ্তাহান্তে নতুন নতুন ‘অফার’ থাকায় ভিড় আরও বেশি হয়। এ সপ্তাহে ৫০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছিল ৯৯ টাকায়। ফলে সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি কেউ। তাই শনিবার ভিড়ও হয়েছিল যথেষ্ট।