গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
নিজের অবস্থানে অনড় সাংসদ মহুয়া মৈত্র। উল্টে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তিনি। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সত্যিকারের সাহস দেখাক ট্রেজারি বেঞ্চ। পারলে বাতিল করুক কৃষি আইন’। তাঁর সংসদের বক্তৃতা নিয়ে বিজেপি-র সাংসদ যখন স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনতে চাইছেন, তখনই টুইটারে এল মহুয়ার জবাব। প্রকারান্তরে যা তাঁর বক্তব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে।
লোকসভার ভাষণে কেন্দ্রকে বিঁধে যা বলেছিলেন, টুইটারে মহুয়া আবার লিখেছেন সেই বক্তব্যের সারমর্ম। তুলে এনেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগ। পাশাপাশি তুলেছেন নতুন কৃষি আইন এবং তার কারণে কৃষক আন্দোলনের বিষয়। যাকে তাঁর সতীর্থরা মনে করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনার প্রয়াসকে চ্যালেঞ্জ। কারণ, বিজেপি-র ওই প্রয়াস নিয়ে সরাসরি কিছু লেখেননি কৃষণনগরের সাংসদ।
বৃহস্পতিবার প্রথমে টুইটারে মহুয়া লেখেন, ‘নাহ্, নির্যাতিতার সই করা হলফনামার ভিত্তিতে সংসদে অভিযোগ তোলা মোটেই লজ্জাজনক নয়। যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে ২২ জন বিচারপতির কাছে হলফনামা দিয়েছিলেন নির্যাতিতা’। শেষ লাইনে লিখেছেন, ‘সংসদে নারীবিদ্বেষের কোনও স্থান নেই’। আধঘণ্টা পর ফের দু’টি টুইট করেন তিনি। লেখেন, ‘সংসদে নির্বাচিত হয়ে ভারত সরকারকে দেশের কৃষকদের কথা ও কৃষক স্বার্থের বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া আমার সৌভাগ্য। সেই স্বার্থকে আহত করে, এমন কিছু করা আইনভঙ্গের সমান’।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর তাঁর ধন্যবাদজ্ঞাপক ভাষণে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন মহুয়া। তা নিয়ে চটেছিলেন বিজেপি-র সাংসদরা। মহুয়ার মন্তব্যকে সভার কার্যবিবরণী বাদ দেওয়ার দাবিও তুলেছিলেন তাঁরা। যদিও বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে বারবার মহুয়া স্পষ্ট করেছেন, বক্তব্য ফেরানোর প্রশ্নই ওঠে না।
ঘটনার পরের দিন কেন্দ্রীয় সরকার স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ না আনার কথা বললেও পরে বিজেপির এক সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ওই প্রস্তাব আনার কথা বলেছেন। যদিও দলীয় ভাবে সে দিকে পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় শাসকদল। অনেকেই মত প্রকাশ করেছিলেন, যেহেতু প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির নাম তুলেছেন মহুয়া, তাই সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। পিছু হটেননি সাংসদ। অনড় থেকেছেন অবস্থানে। সংসদে বক্তৃতা করার পর একই কথা বারবার টুইট করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বৃহস্পতিবারও মহুয়া নতুন করে সেই চ্যালেঞ্জই ছুড়েছেন।