নিশিকান্ত দুবে (বাঁ দিকে) এবং মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
দিল্লি হাই কোর্টে ফের ধাক্কা খেলেন কৃষ্ণনগরের সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীবী তথা প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর আর্জি ছিল, ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন তোলা সংক্রান্ত বিতর্কে দেহাদ্রাই এবং নিশিকান্তকে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিক উচ্চ আদালত। ওই দু’জন যেন এই বিষয়ে নতুন করে কোনও মন্তব্য না করেন বা দাবি না তোলেন। কিন্তু সোমবার মহুয়ার সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। আইন সংক্রান্ত খবর পরিবেশনকারী ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর একটি প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি ইডির বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহুয়া। মহুয়ার বক্তব্য ছিল, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিদেশি মুদ্রা লেনদেন আইন বা ফেমা লঙ্ঘন করার অভিযোগের বিষয়ে খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। সেই খবর প্রকাশ করছে ইডি। তৃণমূলের নেত্রীর দাবি ছিল, তদন্ত শুরু হয়নি। তার আগেই কেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে? মহুয়ার আবেদন ছিল, তদন্ত চলাকালীন তাঁকে নিয়ে যেন কোনও ‘গোপন বা প্রমাণিত না হওয়া’ তথ্য ফাঁস না করে ইডি। এমনকি সংবাদমাধ্যমেও যেন সেই খবর প্রকাশিত না হয় তা নিশ্চিত করতেই মামলা করেন মহুয়া। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লি হাই কোর্ট।
গত ডিসেম্বরে লোকসভার সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির তরফেও স্পিকারের কাছে সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি। বহিষ্কারের পর মহুয়া জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করবেন। এই বহিষ্কারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে এখনও মামলাটি বিচারাধীন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপহার ও টাকা নিয়ে সংসদে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই প্রশ্নে তিনি আদানির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। সাংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দর্শনকে মহুয়া দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তের। একই অভিযোগ করেছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাইও। মহুয়া জানান, বন্ধু দর্শনকে তিনি আইডি, পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন শুধুমাত্র তাঁর প্রশ্নগুলি ‘টাইপ’ করে দেওয়ার জন্য। কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদের এ-ও দাবি, ওই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা বিধি নেই।