উদ্ধব ঠাকরে
মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে সরকারের অন্দরমহলে এ বার নতুন টানাপড়েন।
কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলি নিজেদের রাজ্যে এনপিআর না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ দিকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জোট শরিক কংগ্রেস, এনসিপি-র আপত্তি অগ্রাহ্য করে এনপিআরের কাজ শুরু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কংগ্রেস, এনসিপি-র অবস্থান হল, এনপিআরের আড়ালে আসলে এনআরসি-রই কাজ শুরু করে দিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। উদ্ধব ঠাকরে সরকারের সিদ্ধান্ত, ১ মে থেকে এনপিআরের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, তারা এনপিআর-বিরোধী। রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র চরণ সিংহ সাপরার বক্তব্য, ‘‘আমরা একে সমর্থন করছি না।’’ এনসিপি-র নেতা মজিদ মেমনও জানান, শরদ পওয়ার আগেই এনপিআরের বিরোধিতা করেছিলেন। সরকার যে সিদ্ধান্তই নিক, তা তিন শরিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। কিন্তু শিবসেনার যুক্তি, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তি মেনেই রাজ্য প্রশাসন এনপিআরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কারণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এনপিআরের কাজ ১ মে থেকে শুরু হয়ে ১৫ জুন শেষ হবে। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের পাল্টা যুক্তি, ‘‘দিল্লির হার থেকে শিক্ষা নিয়ে অমিত শাহের উচিত, সিএএ-এনপিআর-এনআরসি নিয়ে সব দলের সঙ্গে কথা বলা।’’ কংগ্রেস, এনসিপি-র আপত্তি সত্ত্বেও উদ্ধব সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে তিনি অবশ্য মুখ খুলতে চাননি।
বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া ভেঙে শিবসেনা কংগ্রেস-এনসিপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার তৈরি করলেও মতাদর্শগত ফারাক থেকেই গিয়েছে। রাহুল গাঁধী বীর সাভারকরের সমালোচনা করলে শিবসেনা তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আবার পুণের
ভীমা কোরেগাঁওয়ের তদন্ত রাজ্য পুলিশের হাত থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনআইএ-র হাতে চলে যাওয়া নিয়েও এনসিপি-র সঙ্গে শিবসেনার মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেছে। বিজেপি এই ফাটলের সুযোগ
নেওয়ার অপেক্ষায় অনেকদিন ধরেই অপেক্ষায় রয়েছে।
বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম দলের মধ্যেই বিভ্রান্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর যুক্তি, এক দিকে পি চিদম্বরম জেএনইউ-তে এনপিআর-এর বিরোধিতা করছেন। অন্য দিকে কংগ্রেস সমর্থিত শিবসেনা সরকার এনপিআর ঘোষণা করেছে। অস্বস্তি সামলাতে আজ এনসিপি নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী জিতেন্দ্র আওহদ দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন যে আলোচনা করে মানুষের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজ্য সরকার যে ইতিমধ্যেই এনপিআরের কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সে কথা তিনি মানতে চাননি।