প্রয়াগরাজ শহরের দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।
শেষ হতে চলেছে মহাকুম্ভ। ২৬ ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রি, অর্থাৎ শিবচতুর্দশী তিথির পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে এ বারের মতো মহাকুম্ভ সমাপ্ত হবে। তার পর আবার ১৪৪ বছরের অপেক্ষা! তাই শেষলগ্নেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় আসছেন কাতারে কাতারে পুণ্যার্থী। সেই আবহে যে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর হয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
জনসমুদ্র সামাল দিতে জারি হয়েছে ভিড় এবং ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের নতুন নির্দেশিকা। বুধবার মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণি সঙ্গমে পুণ্যস্নানের আশায় জড়ো হবেন বহু পুণ্যার্থী। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ভিড় সামাল দিতে মেলাপ্রাঙ্গণে গাড়ি প্রবেশের উপর জারি হয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। মঙ্গলবার বিকেল ৪টে থেকেই মেলাপ্রাঙ্গণে গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রয়াগরাজে গাড়ি প্রবেশের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। বুধবার যত ক্ষণ না পুণ্যার্থীরা নির্বিঘ্নে মেলাপ্রাঙ্গণ ছাড়ছেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত যানবাহনের উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এমনটাই জানানো হয়েছে নয়া নির্দেশিকায়। তবে জরুরি পরিষেবাগুলিকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখা হয়নি। তা ছাড়া, বিশেষ পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীরাও এই ছাড় পাবেন।
এ ছাড়া, মেলাপ্রাঙ্গণের ভিন্ন ভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে ঢোকা পুণ্যার্থীদের নিকটতম ঘাটগুলিতেই স্নানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝাঁসির দিক দিয়ে আসা ভক্তেরা হরিশ্চন্দ্র ঘাটে এবং পুরনো জিটি ঘাটে স্নান করবেন। প্যারেড এলাকা দিয়ে ঢুকলে পুণ্যার্থীরা স্নান করবেন ভরদ্বাজ ঘাট, নাগবাসুকি ঘাট, কালী ঘাট, রাম ঘাট এবং হনুমান ঘাটে।
গত ২৯ জানুয়ারি গভীর রাতে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ৩০ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। সে দিন রাতেই প্রয়াগরাজ, বারাণসী, অযোধ্যা, মির্জাপুর প্রভৃতি বিভিন্ন জেলার সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ওই বৈঠকের পরেও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, মেলাপ্রাঙ্গণে কোনও রকমের যানবাহন প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হবে না। বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল ভিভিআইপি পাসও। মেলা এলাকায় পুলিশি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রশাসনিক স্তরে ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা থামেনি। এ পর্যন্ত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে কুম্ভে। ঘটেছে বহু দুর্ঘটনা। এমনকি, এর আগের শাহি স্নানের দিন অর্থাৎ মাঘীপূর্ণিমা তিথিতেও দীর্ঘ যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে পুণ্যার্থীদের। পুণ্যস্নানের আশা ছেড়ে দিয়ে অনেকেই ফিরতি পথ ধরেছেন। তাই শেষ পুণ্যস্নানের প্রাক্কালে জনসমুদ্র সামাল দিতে আরও সতর্ক হল প্রশাসন।