—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি স্কুলের নামে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। তামিলনাড়ুতে এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে মাদ্রাস হাই কোর্ট। সমস্ত সরকারি স্কুলের নাম থেকে ওই ধরনের শব্দ সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। শুধু ‘আদিবাসী’ নয়, নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করে, এমন কোনও শব্দই স্কুলের নামে ব্যবহার করা যাবে না। আদালত জানিয়েছে, এতে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। ছোটদের স্কুলে যা কাম্য নয়।
তামিলনাড়ুর কলবরায়ণ পাহাড় এলাকায় সম্প্রতি বিষ মদ খেয়ে অন্তত ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। সেখানকার মানুষের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থান সংক্রান্ত একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানি চলছিল হাই কোর্টে। শুক্রবার সেখানেই আদালত সরকারি স্কুলের নামে এই ধরনের শব্দ ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছে। তামিলনাড়ু সরকারকে বলা হয়েছে, অবিলম্বে এই ধরনের স্কুলের নাম পরিবর্তন করতে হবে।
কলবরায়ণ পাহাড় এলাকায় যে সমস্ত সরকারি স্কুল রয়েছে, তার অধিকাংশের নামেই আগে বা পরে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রয়েছে। স্কুলগুলির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সরকারি আদিবাসী আবাসিক স্কুল’। এই নামে আপত্তি জানিয়েছে আদালত। ‘আদিবাসী’ শব্দ সরিয়ে ওই সমস্ত স্কুলের নামে ব্যবহার করতে হবে শুধুমাত্র ‘সরকারি’ শব্দটি। শুক্রবার এই মামলার শুনানি হয়েছে বিচারপতি এসএম সুব্রহ্মণ্যম এবং বিচারপতি সি কুমারাপ্পানের বেঞ্চে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, জনগণের টাকায় চলা সরকারি স্কুলে ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার কাম্য নয়। কারণ, তাতে ওই সমস্ত স্কুলের পড়ুয়ারা নিজেদের পৃথক মনে করতে পারে। তাদের মনে হতে পারে, তারা আশপাশের অন্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে আলাদা, কারণ, তারা ‘আদিবাসী’। একুশ শতকের সমাজে এই ধরনের বৈষম্য ‘বেদনাদায়ক’ বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।
স্কুলের নাম পরিবর্তন করে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। এ ছাড়া, শুক্রবারের মামলায় কলবরায়ণ পাহাড় এলাকার মানুষদের অবস্থা নিয়েও সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। সেখানকার মানুষকে সাধারণ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।