গ্রেস নম্বর কমতেই অসমে মাধ্যমিকে পাশের হার ৫০ শতাংশেরও নীচে নামল। গত বার পাশের হার ছিল ৬২.৭৯ শতাংশ। এ বারে তা মাত্র ৪৭.৯৪ শতাংশ।
সম্প্রতি সর্বানন্দ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, পাশের হার কত হবে তা শিক্ষামন্ত্রীরাই ঠিক করেন। তার ভিত্তিতেই গ্রেস নম্বরের পরিমাণ ঠিক করা হয়। তিনি গ্রেস কমিয়ে এনে রাজ্যের শিক্ষার সঠিক ছবিটি সামনে আনতে সওয়ালও করেন। উল্লেখ্য, পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের আমলে হিমন্ত দীর্ঘ কয়েক বছর শিক্ষামন্ত্রীও ছিলেন। সুতরাং তাঁর কথাকে উড়িয়েও দিতে পারেনি বিরোধীরা। এ বার সেই গ্রেস নম্বরই কমিয়ে আনা হয়েছে। ২০০১ পর্যন্ত রাজ্যে পাশের হার ছিল ৩০ থেকে ৩৮ শতাংশের মধ্যে। হিমন্তর অভিযোগ ছিল, গত দেড় দশকের কংগ্রেস শাসনে তা দ্বিগুণ হয়েছে। সৌজন্যে এই গ্রেস নম্বর। হিমন্ত গ্রেস নম্বর বিষয়ে একটি কমিটি গড়েন। সেই কমিটির সিদ্ধান্ত: আগামী বছর থেকে তিনটি বিষয়ে সর্বোচ্চ ৫ নম্বর করে গ্রেস দেওয়া যাবে। তার বেশি নয়। তবে এ বার অসম মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (সেবা) জানায়, এ বছর গণিতে প্রশ্নপত্র নিয়ে সমস্যা থাকায় সর্বোচ্চ ১৩ নম্বর পর্যন্ত গ্রেস দেওয়া হবে। ইংরাজি, বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানে দেওয়া হবে সর্বাধিক ১০ নম্বরের গ্রেস।
মেধা তালিকার শীর্ষে নলবাড়ির পার্থপ্রতিম ভুঁইয়া (৫৮৯)। দ্বিতীয় স্থানে নলবাড়ির নুরুল হক আলি, ডিব্রুগড়ের তন্ময়ী হাজরিকা ও রাজন্য কাশ্যপ গগৈ (৫৮৮)। তৃতীয় স্থানে লখিমপুরের ভার্গবপ্রতীম বরা (৫৮৭)। এর মধ্যে তীব্র প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হয়েছে নুরুলকে। নুরুলের বাবা মুস্তাফা আলি সাংসারিক চাপে বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারেননি। কৈশোর থেকেই ট্রাক চালানোর কাজে ঢোকেন। সিংহভাগ সময় কাটে রাস্তায়। কিন্তু নিজের সন্তানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও আপস করেননি তিনি। দুই কন্যাকে এমএ ও বিএ পড়াচ্ছেন। কিন্তু ছেলে যে মাত্র এক নম্বর পেলেই রাজ্যে প্রথম হত—এতটা বাবার বিশ্বাসই হচ্ছে না।