Madhya Pradesh

মধ্যপ্রদেশে ‘মামা’কে ব্রাত্য রেখেই হিন্দুত্বের তাস মোদীর

গত দেড় দশকে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে লড়তে হিন্দুত্বের তাস কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ বিজেপি নেতৃত্বই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:০৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে পরপর সফর করেই চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি মাসে চার দিন, তার মধ্যে কেবল এই সপ্তাহেই দু’দিন সে রাজ্যে গেলেন তিনি। আজ চিত্রকূটে পরিচিত ভঙ্গিতে হিন্দুত্বের তরঙ্গ তুলতেও দেখা গেল তাঁকে। যদিও রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত দেড় দশকে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে লড়তে হিন্দুত্বের তাস কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ বিজেপি নেতৃত্বই। এমনিতেই মোদী-অমিত শাহের কাছে কার্যত ব্রাত্য হয়ে পড়া মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চহ্বানকে (যিনি রাজ্যে পরিচিত ‘মামা’ হিসাবে) এ বারের ভোটে এক রকম গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছে। এ দিনও তাঁকে কার্যত মঞ্চের বাইরে রেখেই সমস্ত প্রচারের আলোটুকু ফেলা হল সেই মোদীর উপরে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, মধ্যপ্রদেশের কঠিন লড়াইয়ে তাদের ভরসা তারকা প্রচারক নরেন্দ্র মোদীই।

Advertisement

আজ প্রচারে গিয়ে সাতনা জেলার চিত্রকূটে বিখ্যাত রঘুবীর মন্দিরে পুজো করেন প্রধানমন্ত্রী। যোগ দেন শ্রী সদগুরু সেবা সংঘ ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে। তুলসী পীঠে গিয়ে জগদগুরু রামভদ্রচারিয়ার আশীর্বাদ নিতেও দেখা যায় তাঁকে। যান কাঞ্চ মন্দিরে। একটি অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কি রাষ্ট্রলীলা’, ‘অষ্টধ্যায় ভাষ্য’ প্রমুখ বইয়ের। তুলসী পীঠের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক রামমন্দিরে পুজো করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আজ জগদগুরু রামভদ্রচারিয়ার আশীর্ব্বাদ পেয়েছি। চিত্রকূট আমাকে বরাবরই উজ্জীবিত করে।” অষ্টাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, “এটি ভারতের ভাষা, মেধাসম্পদ এবং গবেষণার সংস্কতি নিয়ে লেখা হাজার বছরের পুরনো গ্রন্থ।” এ দিনের অনুষ্ঠানে সংস্কৃতের জয়গান করে মোদীর উক্তি, “হাজার হাজার বছরে কতই না ভাষা এসেছে আবার মুছে গিয়েছে বিশ্বে। নতুন ভাষা এসে পুরনোকে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি স্থিতধী এবং অটল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃত আরও সমৃদ্ধ হয়েছে, কিন্তু দূষিত হয়নি।”

প্রসঙ্গত চিত্রকূটের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান এই তুলসী পীঠ, যা ১৯৮৭ সালে রামভদ্রচারিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখান থেকে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এখানে দাঁড়িয়ে সংস্কৃত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সেই হিন্দুত্বের তাস খেলেই মোদী একই সঙ্গে পূর্বতন মুসলমান শাসক এবং পরবর্তীতে কংগ্রেস জমানাকে নিশানা করেন। মোদী বলেন, “সংস্কৃত বহু ভাষার জননী। অনেক চেষ্টা হয়েছে গত ১০০০ বছরের দাসত্বের সময় সংস্কৃত ভাষাকে পুরোপুরি শেষ করে দেওয়ার। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু দাসত্বের মানসিকতা বহনকারীরা সংস্কৃত প্রসঙ্গে বিরূপ মনোভাবাপন্ন ছিলেন। অন্য দেশের মানুষ যখন তাঁর নিজের ভাষায় কথা বলেন, তখন এরা প্রশংসা করেন। অথচ তাঁরা মনে করেন, সংস্কৃত ভাষা পিছিয়ে পড়ার লক্ষণ। এই ধরনের মানুষ গত এক হাজার বছরে সফল হননি, ভবিষ্যতেও হবেন না।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement