বিশ্বের ধসপ্রবণ এলাকাগুলির অন্যতম ‘দার্জিলিং-সিকিম’ এলাকা। কিন্তু ধস সম্পর্কে কোনও পূর্বাভাসের ব্যবস্থা নেই। এই পূর্বাভাস ব্যবস্থা না গড়ে উঠলে প্রশাসনের তরফেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয় বলে বুধবার জানালেন অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষক মনীষা সুধীর।
সম্প্রতি মনীষারা সিকিমের চাঁদমারিতে এমন একটি পূর্বাভাস যন্ত্র বসিয়েছেন। তাতে পাথরের চরিত্র, বৃষ্টি, আর্দ্রতা-সহ একাধিক বিষয়ের ‘সেন্সর’ রয়েছে। সেই সেন্সরে ধরা পড়া তথ্য ‘যন্ত্র-বুদ্ধি’ (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স)-এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাস দিতে পারবে। তার ফলে ধসে প্রাণহানি ঠেকানো সম্ভব। মনীষা বলেন, ‘‘ওই যন্ত্রে তথ্য আসা শুরু হয়েছে। কিন্তু পূর্বাভাস ব্যবস্থা এখনও চালু করা হয়নি। শীঘ্রই তা চালু করার কথা বলা হচ্ছে।’’
মিজোরাম, সিকিম ও উত্তরাখণ্ডের ১৭টি জায়গায় সমীক্ষা করে শেষমেশ সিকিমেই প্রথম এই যন্ত্র বসানোর কথা স্থির করেন তাঁরা।
হিমালয় নবীনতম ভঙ্গিল পর্বত। ভূতাত্ত্বিক দিক থেকেও এটি ভূকম্পপ্রবণ। মনীষা বলেন, ‘‘শুধু ভূতাত্ত্বিক গড়ন নয়, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, আবহাওয়াজনিত কারণেও ধস নামে।’’ বর্ষাকালে বিশেষত এই ধসে প্রাণ ও সম্পত্তিহানিও হয়। এই পরিস্থিতিতে ধস কোথায় নামতে পারে তা আগাম আঁচ করতে পারলে প্রশাসনের সুবিধা হবে। শুধু তাই নয়, আমজনতাও এই তথ্য পেলে নিজেদের বাঁচাতে পারবেন। মনীষা বলেন, ‘‘হিমালয়ে প্রচুর পর্যটকও যান। ফলে ধসে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি পর্যটকেরাও বিপদে পড়েন। ধস সম্পর্কে তথ্য পেলে পর্যটকদের মাঝপথে আটকেও থাকতে হবে না।’’ তবে পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, সিকিম ও দার্জিলিঙের অনেক জায়গাতেই অপরিকল্পিত ভাবে বাড়িঘর ও নগরায়ণ ঘটছে। বহু জায়গায় নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। এই বিষয়য়ে রাশ না টানলে পূর্বাভাস পেলেও ক্ষতি আটকানো যাবে না।