ফাইল চিত্র।
সংসদ ও বিধানসভায় যাঁরা প্রতিবাদের নামে কাজকর্ম ভন্ডুল করেন, তাঁদের আচরণ পাল্টানোর দাওয়াই দিলেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। ‘মিশন ৫০০০’ নামে একটি প্রচার অভিযানের ডাক দিয়েছেন তিনি। এর লক্ষ্য হবে, প্রতিটি রাজ্যে নির্বাচনী ক্ষেত্র ধরে সামাজিক মাধ্যমে ওই নামের একটি হ্যান্ডল থেকে প্রচার চালানো। গোটা দেশের পাঁচ হাজার সাংসদ, বিধায়ক ও বিধান পরিষদ সদস্যের মধ্যে যাঁরা আইনসভায় আলোচনা পণ্ড করেন, প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে শোভনতার সীমা ছাড়ান, তাঁদের কথা ‘মিশন ৫০০০’-এর মাধ্যমে তুলে ধরার প্রস্তাব দিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি।
মঙ্গলবার প্রথম প্রণব মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতায় এই প্রস্তাব রাখেন উপরাষ্ট্রপতি। প্রয়াত রাষ্ট্রপতির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে এই বক্তৃতার আয়োজন করেছিল প্রণব মুখোপাধ্যায় লিগ্যাসি ফাউন্ডেশন। বক্তৃতার শীর্ষক ছিল, ‘সাংবিধানিকতা: গণতন্ত্র ও সামূহিক উন্নয়নের নিশ্চয়তা প্রদানকারী’। বেঙ্কাইয়ার মতে, ‘মিশন ৫০০০’-এর প্রচার অভিযান ও জনমতের চাপ যদি আইন প্রণেতাদের আচরণ পাল্টে দিতে পারে, তবে আইনসভাগুলির ছবি পাল্টে যাবে।
এ বারের বাদল অধিবেশনে কিছু বিল হট্টগোলের মধ্যেও পাশ করিয়ে নেওয়া হলেও, আলোচনা হয়েছে সামান্যই। বেঙ্কাইয়া মনে করিয়ে দেন, বিষয় যা-ই হোক আলোচনাকেই এক মাত্র রাস্তা বলে মনে করতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তীক্ষ্ণ স্মৃতি শুধু নয়, তাঁর ঐকমত্য তৈরির অসাধারণ ক্ষমতা ছিল। তাঁর সূত্রই ছিল, বিতর্ক ও আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত, বাধাদান নয় (ডিবেট, ডিসকাস অ্যান্ড ডিসাইড। ডোন্ট ডিজ়রাপ্ট)।
অতীতের লেনদেনের উপরে কর চাপানোর আইন হয়েছিল প্রণব মুখোপাধ্যায় অর্থমন্ত্রী থাকার সময়। সেই কর প্রত্যাহারের বিল পাশ হয়েছে বাদল অধিবেশনে। আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে বেঙ্কাইয়া এ দিন বক্তৃতায় সেই প্রসঙ্গ টানেন। মন্তব্য করেন, “প্রণবদা বেঁচে থাকলে হয়তো স্বাগতই জানাতেন একে।” যদিও প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর আত্মজীবনীতে স্পষ্টই উল্লেখ করে গিয়েছেন যে, “ওই কর চাপানোর প্রচুর সমালোচনা হলেও পরবর্তী কোনও অর্থমন্ত্রীই এটি বাতিল করেননি। দেশের স্বার্থেই এই কাজ করেছি।” সঙ্ঘ শিবিরের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চও এটিকে দেশপ্রেমিকের কাজ বলে দাবি করেছিল।