কাছাড়ে মালগাড়ি ছিটকে লাইন থেকে কৃষিজমিতে

এ যেন সেই গাইসালের ট্রেন দুর্ঘটনার ছবি। কামরার ওপর কামরা। তফাৎ শুধু এটাই, এ বার দুর্ঘটনার মুখে মালগাড়ি। মুখোমুখি সংঘর্ষও হয়নি দু’টি ট্রেনের। গত রাতে কাছাড় জেলার শালচাপড়ায় ওয়াগন নিয়ে ইঞ্জিন এগিয়েছিল ‘শান্টিং’য়ের জন্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০২:৫৯
Share:

চাষের জমিতে মালগাড়ি। কাছাড়ের শালচাপড়ায়।— নিজস্ব চিত্র।

এ যেন সেই গাইসালের ট্রেন দুর্ঘটনার ছবি। কামরার ওপর কামরা। তফাৎ শুধু এটাই, এ বার দুর্ঘটনার মুখে মালগাড়ি। মুখোমুখি সংঘর্ষও হয়নি দু’টি ট্রেনের।

Advertisement

গত রাতে কাছাড় জেলার শালচাপড়ায় ওয়াগন নিয়ে ইঞ্জিন এগিয়েছিল ‘শান্টিং’য়ের জন্য। স্টেশন থেকে কিছু দূর এগোতেই অতিরিক্ত লাইন শেষ হয়ে যায়। চালক তা বুঝতে না পেরে এগোতে থাকলে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে ট্রেনটি। ইঞ্জিনসমেত কামরাগুলি গিয়ে পড়ে চাষের জমিতে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়েছে, কার দোষে এমন দুর্ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

রেল সূত্রে খবর, ভারতীয় খাদ্য নিগমের গম নিয়ে শালচাপড়া এসেছিল ৪২ ওয়াগনের মালগাড়ি। মাল খালাসের পর চালক খালি ওয়াগন নিয়ে এগোন শান্টিং (সামনে-পিছনে সরে মূল লাইনে ওঠা) করতে। নতুন ব্রডগেজ লাইন। এখনও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের অনুমতি মেলেনি। ফলে এত দিন গুদাম থেকে বেরিয়ে মূল লাইনে শান্টিং করা হতো। কিন্তু গত কাল সে জন্য অতিরিক্ত লাইন খুলে দেওয়া হয়। মালগাড়ির দুই চালক এম আর বরদলৈ ও বি কে বরদলৈকে নতুন লাইনে যেতে বলা হয়। কিন্তু সেটি যে কিছু দূর এগিয়েই শেষ হয়ে গিয়েছে (রেলের ভাষায়— ডেড লাইন), তা বুঝতে পারেননি চালকরা। ট্রেন তখন চালাচ্ছিলেন এম আর বরদলৈ। লাইন শেষ হওয়ার বিষয়টি যখন তিনি বুঝতে পারেন, তখন ইঞ্জিন তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই। সোজা কৃষিজমিতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে মালগাড়িটি। চারটি ওয়াগন একটির উপর একটি উঠে ছিটকে পড়ে ডানে-বাঁয়ে। ছ’টি কামরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চালকরা ছিলেন ইঞ্জিনেই। এক জনের পায়ে সামান্য চোট লেগেছে।

Advertisement

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বদরপুর আঞ্চলিক ম্যানেজার নরকিশোর সিংহ জানান, ডেড-লাইন অতিক্রম করায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। কার দোষে তা ঘটল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রাতেই উদ্ধারকারী দল গুয়াহাটি থেকে ক্রেন নিয়ে রওনা হন। আজ দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াগনগুলি তুলে আনার কাজ চলেছে। ‘অ্যাক্সিডেন্ট রিলিফ ট্রেনের’ সঙ্গে আসা সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার আই রহমান বলেন, ‘‘খালি ওয়াগনগুলির পর ইঞ্জিনটিকে তোলা হবে।’’ লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইনে মালগাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে গত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে। তিন মাসে বেশ কয়েক বার লাইন থেকে চাকা পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সবকটিই ছোটখাটো ঘটনা। কিন্তু গত রাতের ছবি বরাক উপত্যকার রেল দুর্ঘটনাগুলির অন্যতম।

এলাকাবাসীর বক্তব্য, যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ বলে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement