প্রতীকী চিত্র।
টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেও করোনায় আক্রান্ত হলেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী। দেশে টিকাকরণ চালু হওয়ার পর এমন ঘটনা এই প্রথম।
আক্রান্ত দুই স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে একজন লখনউয়ের সিভিল হাসপাতালের আপৎকালীন মেডিক্যাল অফিসার। অন্যজন দিল্লির সরকারি হাসপাতালের নার্স। স্বাস্থ্যকর্মী হওয়ায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই সময় মতো টিকার দু’টি ডোজ নিয়েছিলেন দু’জন। উভয় ক্ষেত্রেই টিকা নেওয়ার পর কয়েকদিনের ব্যবধানে তাঁদের দেহে করোনার উপসর্গ দেখা যায়। পরীক্ষা করানো হলে দু’জনেরই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
দিল্লির সরকারচালিত সত্যবাদী রাজা হরিশচন্দ্র হাসপাতালের ওই নার্স একমাসেরও বেশি আগে টিকার দু’টি ডোজ সম্পূর্ণ করেছিলেন। দিন ক’য়েক আগে তাঁর শরীরে প্রবল যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় সোমবার দুপুরে করোনা পরীক্ষা করান। মঙ্গলবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে তিনি দেশের প্রথম রোগী নন, যাঁর টিকার ডোজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরও করোনা সংক্রমণ হয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি লখনউ সিভিল হাসপাতালের আপৎকালীন মেডিক্যাল অফিসার নিতিন মিশ্র কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। ১৬ মার্চ তিনি করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেন। গত ১৮ মার্চ হঠাৎ তাঁর জ্বর এবং তীব্র কাশি হওয়ায় তিনি করোনা পরীক্ষা করান। ২১ মার্চ তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
দেশে করোনার দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশেও গত কয়েকদিনে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে টিকা নেওয়ার পরও চিকিৎসকের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্যবিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল ডিএস নেগি জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসক নিতিন ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনের দু’টি ডোজ নিয়েছিলেন। তারপরই করোনা উপসর্গ ধরা পড়ে তাঁর। ওই চিকিৎসক আপাতত বাড়িতেই নিভৃতবাসে রয়েছেন।
টিকার প্রভাব প্রসঙ্গে নেগি বলেন, ‘‘কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা ৮০-৯০ শতাংশ। তবে এই টিকা কখনওই করোনার বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে কাজ করে না। বরং করোনায় আক্রান্ত রোগীকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হাত থেকে বাঁচায়।’’
টিকার কার্যকারিতা প্রসঙ্গে কিং জর্জ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর অমিতা জৈন জানিয়েছেন, করোনার টিকা নেওয়ার পর এই রোগের সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে বেশ কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে। তার আগে করোনা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতেও পারে। দেখা দিতে পারে উপসর্গও।