রান্নার গ্যাসের দাম যেমন বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে ভরেছে সরকারের কোষাগারও। পেট্রোপণ্য এবং এলপিজির উপর আরোপিত উৎপাদন শুল্ক থেকে গত ৯ মাসে ৩ লক্ষ কোটি টাকা জমা পড়েছে কেন্দ্রের কোষাগারে। যা গত সাত বছরে সর্বোচ্চ। গ্যাসের দাম নিয়ে যখন দেশজুড়ে মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়, ঠিক তখনই এই তথ্য সামনে আনলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিষয়ক মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে এই শুল্ক সংগ্রহের পরিমাণ ওঠানামা করেছেন ২ লক্ষ কোটির আশপাশে। এই প্রথম ৯ মাসের মধ্যেই তা ৩ লক্ষ কোটি ছাড়াল। মন্ত্রীর হিসেব বলছে, ২০১৯-২০তে কেন্দ্র ১.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা উৎপাদন শুল্ক সংগ্রহ করেছিল। ২০১৮-১৯এ ২.৩৫ লক্ষ কোটি। তারও আগে ২০১৭-১৮এ ২.৪১ লক্ষ কোটি এবং ২০১৬-১৭এ ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকার উৎপাদন শুল্ক সংগ্রহ করেছিল কেন্দ্র। মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, গত ৭ বছরে পেট্রোপণ্যে কেন্দ্রের সংগৃহীত শুল্কের পরিমাণ ৪৫৯ শতাংশ বেড়েছে।
গত তিন মাস ২২৫ টাকা বেড়েছে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম। ২০২০ ডিসেম্বরে ৫৯৪ টাকা থেকে ২০২১-এর মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ৮১৯ টাকা। বেড়েছে পেট্রেল, ডিজেল, কেরোসিনের দামও। এই নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছেন দীর্ঘদিন ধরেই। লোকসভায় কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। লিখিত জবাবে মন্ত্রী অবশ্য তিন মাসের হিসাবে যাননি। বদলে সাত বছরের হিসেব সামনে রেখেছেন। জানিয়েছেন, সাত বছরে দ্বিগুণ হয়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। ২০১৪ সালের ১ মার্চ রান্নার গ্যাসের দাম ছিল ৪১০.৫টাকা। আর এ বছর মার্চে সেই একই সিলিন্ডারের দাম ৮১৯ টাকা। একই ভাবে গত সাত বছরে বেড়েছে গণবণ্টন প্রক্রিয়ায় সরবরাহ করা কেরোসিনের দামও। ২০১৪ সালে লিটার প্রতি ১৪.৯৬ টাকা থেকে বেড়ে ২০২১-এ তা বেড়ে হয়েছে প্রতি লিটারে ৩৫.৩৫ টাকা।
সরকারি ওই তথ্যে মন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্র এখন পেট্রলে লিটার প্রতি ৩২.৯০ টাকা, ডিজেলে লিটার প্রতি ৩১.৮০ টাকা উৎপাদন শুল্ক নিয়ে থাকে এবং প্রতিমাসে ৩৩ হাজার কোটি টাকা উৎপাদন শুল্ক সংগ্রহ করে। ২০১৮ সালে পেট্রলে শুল্কের পরিমাণ ছিল লিটারে ১৭.৯৮ টাকা। ডিজেলে ১৩.৮৩। অর্থাৎ গত দু’বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে এই শুল্কের পরিমাণও।