এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরে। ফাইল চিত্র।
গত ১ মে ঔরাঙ্গাবাদের এক জনসভা থেকে রাজ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, ৪ মে-র মধ্যে মসজিদগুলিতে লাউডস্পিকার বন্ধ না করলে সেগুলির সামনে গিয়ে হনুমান চালিশা লাউডস্পিকারে বাজানো হবে। জনগণকে তার জন্য প্রস্তুতিও নেওয়ার পরামর্শ দেন। মঙ্গলবারও একই সুর শোনা যায় রাজের গলায়। বার বার তাঁর এই হুঁশিয়ারিতে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কা করেই মহারাষ্ট্র জুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
রাজ জানিয়েছেন, বিষয়টি শুধু মসজিদের নয়। অনেক মন্দির আছে যেখানে অবৈধ ভাবে লাউডস্পিকার বাজানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, “আমি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, অবৈধ লাউডস্পিকারের ব্যবহার কোনও ধর্মীয় বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক বিষয়।”
রাজের হুঁশিয়ারি, “মসজিদে যদি লাউডস্পিকার জোরে বাজানো হয়, আমরাও প্রস্তুত তার জবাব দিতে। ৪৫-৫৫ ডেসিবেল আওয়াজ ঠিক আছে। কিন্তু এর জন্য লাউডস্পিকারের দরকার কিসের? অবৈধ লাউডস্পিকার অবিলম্বে সরাতে হবে।”
রাজ আরও বলেন, “অনেক অবৈধ মসজিদ আছে। কেন তাদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে? এই বিষয়টি শুধু সকালে প্রার্থনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।”
বিষয়টি সামাজিক। এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি রাজের। তাঁর কথায়, “সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি করার কোনও ইচ্ছা নেই। এই শব্দদূষণ মহারাষ্ট্রে বন্ধ হওয়া উচিত। যত দিন না এই শব্দদূষণ বন্ধ হচ্ছে, তত দিন প্রতিবাদ চলবে।”
রাজের হুঁশিয়ারি, এটি এক দিনের বিষয় নয়। যদি মসজিদগুলি নির্দেশিকা না মেনে চলে তা হলে দ্বিগুণ শব্দে হনুমান চালিসা বাজানো হবে। তাঁর কথায়, “লাউডস্পিকারের জন্য পড়ুয়া এবং অসুস্থ মানুষদের ভোগান্তি হয়। ধর্ম কি মানুষের থেকে বড়?”
রাজ ঠাকরে সংবাদমাধ্যমে বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত এবং রাজ্যের বাইরে থেকে আমার কাছে বহু ফোন আসছে। বহু জায়গায় আমার দলের কর্মীদের আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হয়েছে। যাঁরা আইন মানছেন তাঁদের আটক করা হচ্ছে। আর যাঁরা আইন ভাঙছেন তাঁরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।”
বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এমএনএস কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত করেন। রাজের বাড়ির সামনেও ভিড় জমিয়েছিলেন বহু কর্মী। গোটা রাজ্য থেকে আড়াইশো কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরের হুঁশিয়ারির পরই মুম্বইয়ের বহু মসজিদে বুধবার লাউডস্পিকার বন্ধ রাখা হয় প্রার্থনার সময়। এ ছাড়াও মহারাষ্ট্রের পারভানি, ওসমানাবাদ, হিঙ্গোলি, জালনার কিছু অংশে, নান্দেড়, নন্দুরবার, শিরডি এবং শ্রীরামপুরে মসজিদগুলিতে প্রার্থনার সময় লাউডস্পিকার বন্ধ রাখা হয়েছিল। আবার কোনও কোনও মসজিদে খুব নিচু স্বরে লাউডস্পিকার বাজানো হয়।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, মুম্বইয়ে মোট ১ হাজার ১৪০টি মসজিদ আছে। তার মধ্যে ১৩৫টি মসজিদ সকাল ৬টার আগেই লাউডস্পিকার ব্যবহার করেছে। দফতর বলেছে, ‘যে সব মসজিদ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে সেগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।”