আস্তানা খুঁজে বেড়াচ্ছে দলছুট বাঘটি। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
নিঃসঙ্গ যাত্রা ভবঘুরে বাঘের। খাল-বিল পেরিয়ে একটানা হেঁটে চলেছে সে। তাতে নয়া রেকর্ড তৈরি হয়েছে। ৭০ দিনে ৩০০ কিলোমিটার পথ পার করেছে বাঘটি। এত কম সময়ে এতটা লম্বা পথ পেরনোর রেকর্ড আর কোনও জন্তুর নেই। তবে এখনও যাত্রা জারি তার। কোথায় গিয়ে থামে সেটাই দেখার।
নয়া আশ্রয়ের খোঁজে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা থেকে রওনা দিয়েছিল দলছুট ওই পুরুষ বাঘটি। ৩৫০ কিলোমিটার পেরিয়ে মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার পালসপানি পৌঁছেছে। তবে মনের মতো জায়গা এখনও মেলেনি। তাই হেঁটে চলেছে সে। এই মুহূর্তে মধ্যপ্রদেশের মেলঘাট বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্র (এমটিআর)এবং সাতপুরা বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে যথাক্রমে ৫০ ও ১০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সে।
বাঘটির গতিবিধির ওপর নজর রয়েছে বন দফতরের। তাদের একটি দল বাঘটিকে অনুসরণ করছে। গোটা বিষয়টির দায়িত্বে রয়েছেন ডিএফও হরিশচন্দ্র বাঘমোড়ে। তিনি বলেন, ‘‘বাঘটির যাত্রাপথ মোটেও মসৃণ ছিল না। ব্যস্ততম অমরাবতী-নাগপুর ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরোতে হয়েছে তাকে। পেরোতে হয়েছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি, গ্রামের এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। সোমবার সন্ধেয় বেতুল জেলায় ঢোকে সে। তবে সেখানে পৌঁছতে তিন-তিনটি খাল সাঁতরে পেরোতে হয়েছে।’’
আর পড়ুন: এই মূর্তি তৈরির টাকায় হতে পারত ছ’টা মঙ্গল অভিযান!
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় জন্ম এবং বেডে় ওঠা বাঘটির। তার সঙ্গে আরও তিনটি শাবক ছিল সেখানে। হঠাৎই দলছুট হয়ে গিয়েছিল এই বাঘটি। ১৫-২০ অগস্টের মধ্যে নয়া আস্তানার খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। সেই থেকে হেঁটে চলেছে।
এর আগে, ২০১১ সালে এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছিল। সে বার কর্নাটকে একটি দলছুট বাঘ ১৫ মাসে ২৮০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছিল। তবে মহারাষ্ট্র থেকে মধ্যপ্রদেশে রওনা দেওয়া বাঘটিকে নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় বন দফতর। কারণ ইতিমধ্যে দু’জনের উপর হামলা করেছে সে। ১৯ অক্টোবর অমরাবতী জেলায় তার হামলায় মৃত্যু হয় পেশায় কৃষক রাজেন্দ্র নিমকরের। ২২ অক্টোবর অঞ্জনসিঙ্গিতে মৃত্যু হয় মোরেশ্বর ওয়ালকের।
আর পড়ুন: বিশ্বের উচ্চতম! সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সেই ঘটনার পর বাঘটিকে ঘুম পাড়ানি ইঞ্জেকশন দিতে নির্দেশ দেন রাজ্য বন্য পশু সংরক্ষণ দফতরের প্রধান এ কে মিশ্র। আগামী ৩০ নভেম্বরের পর্যন্ত বৈধ সেই নির্দেশ। তার মধ্যে বাঘটি যদি মধ্যপ্রদেশের কোথাও থিতু হয়, তাহলে আপনা আপনি সেটি অবৈধ হয়ে যাবে। তবে বন দফতরের দাবি, একাধিকবার বাঘটিকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় মানুষের কোলাহলে তা সম্ভব হয়নি।