লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লা। — ফাইল চিত্র।
সংসদে সাংবাদিকদের চলাফেরার উপর বাড়তি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তবে সেই বিধিনিষেধ থাকছে না। সোমবার সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের বিক্ষোভের পর এমনই জানালেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। ক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তার পরই স্পিকার স্পষ্ট করেন অবস্থান।
সোমবার সাংবাদিকদের গতিবিধির উপর নেমে এসেছিল নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া। সংসদের অন্যতম প্রবেশপথ ‘মকরদ্বার’ পর্যন্ত সাংবাদিকেরা যেতে পারবেন না, এমনই জানানো হয়েছিল নতুন বিজ্ঞপ্তিতে। এমনকি, সাংসদদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে নির্দিষ্ট এলাকাতেই থাকতে হবে সাংবাদিকদের, বিজ্ঞপ্তিতে তা-ও উল্লেখ করা হয়েছিল। এই বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সরব হন তাঁরা। সোমবার সংসদ চত্বরে প্রতিবাদে শামিল হন সাংবাদিকেরা। ‘প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকেও সংসদের নয়া বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করা হয়। সাংবাদিকদের এই প্রতিবাদে পাশে দাঁড়িয়েছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, মোদী সরকার এ ভাবেই সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে।
সোমবার সাংবাদিকদের উদ্দেশে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সংসদ। উল্লেখ্য, প্রায় প্রতি দিনই বহু সাংবাদিক খবর সংগ্রহ করতে সংসদে যান। কথা বলেন সাংসদদের সঙ্গে। সংসদের ভিতরে ঢুকতে না পারলেও অনেক সাংবাদিক সংসদ চত্বরেই ঘুরে বেড়ান খবরের আশায়। কিন্তু এ বার থেকে সংসদ চত্বরের সর্বত্র যেতে পারবেন না সাংবাদিকেরা। তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে সোমবার সংসদের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংসদের মকরদ্বার পর্যন্ত সাংবাদিকেরা প্রবেশ করতে পারবেন না। একটি নির্দিষ্ট ঘেরাটোপের মধ্যে তাঁদের গতিবিধি সীমিত থাকবে। সংসদের খোলা এলাকাতে সাংবাদিকদের ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকি, সাংসদদের সঙ্গে কথা বলতে হলে সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া এলাকার মধ্যে থেকেই তা করতে হবে।
এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় সাংবাদিক মহলে। বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবিতে সোমবার অনেক সাংবাদিক সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। এই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমেও। অনেক নামী সাংবাদিক সংসদের এই বিধিনিষেধ নিয়ে পোস্ট করেন। ‘প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া’ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে।
সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদদের। সাগরিকা ঘোষ, সুস্মিতা দেবেরা জানান, এ বার সাংবাদিকেরা তাঁদের অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। তাদের দাবি, বিজেপি ভয় পেয়েছে, তাই এমন বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে সাংবাদিকদের উপর। তবে লোকসভার স্পিকারের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা হয়। তিনি জানান, বাড়তি কোনও বিধিনিষেধ থাকবে না সাংবাদিকদের জন্য। কেন এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তা-ও জানান ওম বিড়লা। তাঁর দাবি, কৃষক সংগঠনের নেতাদের আসায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল সেই কারণেই ওই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।