জল্পনা ছিল অনেক দিন ধরেই। বারাণসীর পাশাপাশি বেঙ্গালুরু দক্ষিণ কেন্দ্রেও এ বার প্রার্থী হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দল অবশ্য পরে জানিয়ে দিয়েছিল, মোদী নন, প্রার্থী হবেন অন্য কেউ। এক কদম এগিয়ে কর্নাটক বিজেপির শীর্ষ নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বেঙ্গালুরু দক্ষিণে প্রার্থী হতে পারেন প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ওই আসনটি থেকে পাঁচ বারের সাংসদ অনন্ত কুমারের স্ত্রী তেজস্বিনী। কিন্তু গত কাল রাতে বিজেপির প্রার্থী তালিকা উল্টে দিল সব অঙ্ক। বহুচর্চিত কেন্দ্রটিতে প্রার্থী হয়েছেন ২৮ বছরের তেজস্বী সূর্য্য। আর তাতেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন তেজস্বিনী, বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর স্ত্রী।
বিজেপির প্রার্থী তালিকায় নিজের নাম না দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ৫৩ বছর বয়সি তেজস্বিনী। সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘এটা দলের কর্মীদের জন্য একটা ধাক্কা। আমার জন্যও। তবে নিজেকে সব সময়েই বলে এসেছি, আমাদের পরিণত আচরণ করতে হবে। কারণ, বিজেপি অন্য দলের থেকে আলাদা।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মেনে নেব। প্রশ্ন তোলার প্রয়োজন নেই। আমার স্বামী ও আমি দেশকে সর্বাগ্রে জায়গা দিয়েছি। তার পরে দল। নিজেদের কথা ভাবা সবার শেষে।’’ বিজেপির যে কর্মীরা তাঁকে প্রার্থী হিসেবে ভেবে বসে আছেন, টুইটারে তাঁদের সংযত থাকার আর্জি জানিয়েছেন ‘চৌকিদার’ তেজস্বিনী।
আর যিনি টিকিট পেয়ে বিজেপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হলেন, সেই ২৮ বছর বয়সি তেজস্বী সূর্য্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ও মাই গড! ভাবতেই পারছি না। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আর সবচেয়ে বড় দলের সভাপতি বেঙ্গালুরু দক্ষিণের মতো কেন্দ্রে ২৮ বছর বয়সি কারও উপর আস্থা রেখেছেন। এটা শুধু বিজেপিতেই সম্ভব।’’ উত্তেজনায় তাঁর ঘুম আসছে না, লিখতে গিয়ে হাত কাঁপছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সে সব কথাও লিখেছেন বিজেপি প্রার্থী। তেজস্বী জানিয়েছেন, তেজস্বিনী তাঁর মায়ের মতো। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন জানিয়ে আর্শীর্বাদ করেছেন তাঁকে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কী কারণে বহুচর্চিত বেঙ্গালুরু দক্ষিণে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হল তেজস্বীকে?
বিজেপির একটি সূত্র বলছে, বেঙ্গালুরু দক্ষিণ আসনটি এ বার দলের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, রাজ্যে কংগ্রেস-জেডিএসের জোট। গত বছরেই এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জয়নগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি তা টের পেয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে জেতা ওই আসনে কংগ্রেস-জেসিএস জোটের কাছে হেরে গিয়েছিল বিজেপি। আর এই লোকসভা ভোটে বেঙ্গালুরু দক্ষিণে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা বি কে হরিপ্রসাদ। যিনি ওই কেন্দ্রে পরিচিত নাম। সে কারণেই নতুন কোনও মুখের প্রয়োজন ছিল বিজেপির। তেজস্বী সূর্য্য পেশায় আইনজীবী। সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ। বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তেজস্বী তুখোর বক্তা হিসেবেও পরিচিত। বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, নিজের বক্তব্যে সব সময়েই মেরুকরণের চেষ্টা করে যান তেজস্বী।