সারথি: চালকের আসনে রাহুল গাঁধী। সওয়ার পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। বুধবার লুধিয়ানায়। ছবি: পিটিআই
নরেন্দ্র মোদী ভাবেন, দেশ চালাতে পারেন এক জনই। শেষ পর্বের ভোটের প্রচারে পঞ্জাবের বারগারিতে দাঁড়িয়ে এই ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে মোদীর ব্যঙ্গ করার প্রসঙ্গ টেনে রাহুলের দাবি, এনডিএ সরকারের পাঁচ বছর কেটে যাওয়ার পরে এখন মোদীর দিকে তাকিয়েই গোটা দেশ হাসছে।
এ দিন রাজস্থানের অলওয়ারে গণধর্ষিতার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল রাহুলের। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় সেখানে যেতে পারেননি তিনি। আগামিকাল অলওয়ারের ওই বাড়িতে যাবেন রাহুল। কংগ্রেস সভাপতি এ দিন পঞ্জাবের ফরিদকোট ও লুধিয়ানা জেলায় দুটি জনসভা করেন। ফরিদকোটের বারগারিতে রাহুলের নিশানায় ছিলেন মোদী। রাহুল বলেন, ‘‘মোদী ভাবছেন, এক জনই খালি দেশ চালাতে পারে। তবে দেশ চালানোর আসল মালিক জনতা।’’ ইউপিএ সরকারের সঙ্গে মোদী জমানার তুলনাও টানেন কংগ্রেস সভাপতি। বলেন, ‘‘মনমোহন সিংহকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতেন মোদী। কিন্তু পাঁচ বছর পরে উনি আর মনমোহন সিংহকে ব্যঙ্গ করেন না, দেশের মানুষ এখন তাঁকে দেখেই হাসে।’’ রাহুলের দাবি, নোট বাতিল আর জিএসটির মতো সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন মোদী। তিনি যদি এ ব্যাপারে মনমোহনের পরামর্শ নিতেন, তা হলে ওই দু’টি ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত থেকে দেশ বাঁচতে পারতো। এই দুই সিদ্ধান্ত দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে নেতিবাচক ছাপ ফেলতে পারে বলে মনমোহন যে ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন এবং তা যে অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে, তা-ও দাবি করেন রাহুল।
কংগ্রেস জমানায় দেশের অর্থনীতিতে ঘুমন্ত হাতির সঙ্গে তুলনা করেছেন মোদী। সে প্রসঙ্গ টেনে আজ রাহুল পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, যখন পঞ্জাবের চাষিরা কঠোর পরিশ্রম করে সবুজ বিপ্লব এনেছিলেন, সে সময়ে কোথায় ছিলেন মোদী? ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে মোদীর দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি আজও বাস্তবায়িত হয়নি বলেই অভিযোগ আনেন তিনি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
‘মোদীলাই’! ইংরেজি অভিধানে একটি নতুন শব্দের খোঁজ দিয়েছেন রাহুল গাঁধী তাঁর টুইটারে। শুধু খোঁজই দেননি। শব্দার্থের স্ন্যাপশটটিও দিয়ে দিয়েছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে ‘মোদীলাই’ শব্দের তিনটি অর্থ। এক, ক্রমাগত সত্যকে পরিবর্তন করা। দুই, সহজাত ও স্বাভাবিক প্রবণতায় মিথ্যে বলা। তিন, কোনও বিরতি ছাড়াই মিথ্যে বলে যাওয়া! এর বেশি আর কিছু লেখেননি রাহুল।
১৯৮৪ সালে শিখ বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে ভোটের মুখে কংগ্রেসের দিকে আক্রমণ তীব্র করে তুলেছে বিজেপি। এর সঙ্গে জুড়েছে স্যাম পিত্রোদার ‘হুয়া তো হুয়া’ মন্তব্য। আজ পঞ্জাবে গিয়ে শিরোমনি অকালি দল-বিজেপির জোট সরকারের আমলে ধর্মগ্রন্থ অপবিত্র করার ঘটনা প্রসঙ্গ টানেন রাহুল। বলেন, ‘‘যারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।’’ কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত তিনি নিশ্চিত করবেন বলেই আশ্বাস দিয়েছেন রাহুল। কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও গত কাল পঞ্জাবে ভোটপ্রচারে এসে একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।