স্বাস্থ্যজনিত কারণে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন সুষমা স্বরাজ।—ফাইল ছবি।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন না। জানিয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত তাঁর। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে ইতিমধ্যে তা জানিয়েও দিয়েছেন বলে খবর। যদিও দলের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
চলতি মাসের শেষে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানকার বিদিশার সাংসদ সুষমা। দলের হয়ে প্রচার চালাতে এই মুহূর্তে সেখানেই রয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ইনদওরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। বলেন, ‘‘যদিও পার্টি-ই সবকিছু ঠিক করে। তবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আগামী নির্বাচনে আর লড়ব না।’’
২০১৬ সালে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর থেকে লাগাতার শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন সুষমা স্বরাজ। যে কারণে গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও যেতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু এই সরে যাওয়া কি শুধুমাত্র স্বাস্থ্যজনিত কারণে? নাকি দলের অন্দরে গুরুত্ব কমে যাওয়াই মূল কারণ? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
সংবাদমাধ্যমকে বিবৃতি দিচ্ছেন সুষমা স্বরাজ।
আরও পড়ুন: আপনারা শুনানির যোগ্য নন, তথ্য ফাঁসে ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট বলল অলোক-আস্থানা শিবিরকে
আরও পড়ুন: মহিলাদের মূত্র সংক্রমণ রুখতে সস্তা যন্ত্র উদ্ভাবন আইআইটি-র
বরাবর লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুষমা স্বরাজ। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর উত্থানে যে ক’জন বিজেপি নেতা ততটা স্বস্তি পাননি, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। যদিও তাঁর ভাবমূর্তি ও রাজনৈতিক ভারের কারণে এই অবস্থান মন্ত্রিত্বের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়নি। এমনকি, বিদেশমন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েও কার্যত নাম সর্বস্ব মন্ত্রী হয়ে রয়ে গিয়েছেন তিনি। বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনাই হোক বা পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণ, বর্তমানে সব ক্ষেত্রেই জাঁকিয়ে বসেছেন নরেন্দ্র মোদী।
সরকারের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব আরও প্রকট হয়ে ধরা পড়ে বছরের শুরুতে। লাভ জিহাদ নিয়ে দেশজুড়ে যখন তাণ্ডব চালাচ্ছিল গেরুয়াপন্থীরা, সেই সময় লখনউয়ের ভিনধর্মী এক দম্পতির পাশে দাঁড়ান সুষমা। পাসপোর্ট নিতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েন ওই দম্পতি। যার তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি। কিন্তু গোটা ঘটনায় হিন্দুত্ববাদীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ইন্টারনেট ট্রোলিংয়ের শিকার হন। সেই সময় রাজনাথ সিংহ ছাড়া কাউকেই পাশে পাননি সুষমা। বিরোধী দল কংগ্রেস তাঁর হয়ে গলা চড়ালেও, নীরব ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
তাহলে কি এ সবের জেরেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? এখনও পর্যন্ত তার সদুত্তর মেলেনি। রাজ্যসভার প্রার্থী করে তাঁকে সংসদে ফিরিয়ে আনা হতে পারে বলে বিজেপির অন্দরে জল্পনা।