সেনাকর্মীদের ‘এক র্যাঙ্ক এক পেনশন (ওআরওপি)’ নিয়ে দেওয়া প্রতিটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে কংগ্রেস। দাবি রাহুলের। —ফাইল চিত্র।
রাহুল এ বার সেনাকর্মীদের পাশে। ঘোষণা করলেন, ২০১৯-এ ক্ষমতায় এলে সেনাকর্মীদের ‘এক র্যাঙ্ক এক পেনশন (ওআরওপি)’ নিয়ে দেওয়া প্রতিটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে কংগ্রেস। দলের সদর দফতরে রাহুল আজ প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সঙ্গে আধ ঘণ্টা বৈঠক করেন। তার পরে সাংবাদিক বৈঠকে ওই কথা ঘোষণা করেন কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, প্রাক্তন সেনাকর্মীরা তাঁকে জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার এখনও ওআরওপি পুরোপুরি বাস্তবায়িত করেনি। রাহুলের ক্ষোভ, ‘‘অনিল অম্বানীকে দেওয়ার জন্য এদের কাছে ৩০ হাজার কোটি টাকা আছে। কিন্তু সেনাদের ওআরওপি খাতে দেওয়ার জন্য ৮৩০০ কোটি টাকা নেই!’’
প্রাক্তন সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে শুধু রাহুল নন, উপস্থিত ছিলেন মনমোহন জমানার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি, এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক গহলৌত, দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালারাও। বৈঠক সেরে বেরিয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৎবীর সিংহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে আমরা অনুরোধ করেছি, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তারা যেন সরকারের কাছে ওআরওপি প্রসঙ্গ তোলে।’’ বেশ কয়েক বছর ধরেই এক র্যাঙ্ক এক পেনশনের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই প্রাক্তন মেজর জেনারেল। সাংবাদিকদের কাছে তিনি আজ ক্ষোভ উগরে দেন। অভিযোগ করেন, মোদী সরকার ২০১৫-এ ২৪ লক্ষ প্রাক্তন সেনাকর্মীর জন্য ওআরওপি চালু করার কথা ঘোষণা করেছিল মাত্র। সাতটি গুরুতর খামতির কারণে এর উদ্দেশ্যটাই পূরণ হয়নি। কিন্তু বাস্তবে তার ধারেকাছেও পৌঁছয়নি। সৎবীর বলেন, ‘‘সৈনিক হয়েও আজ আমরা পথে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ১২৩১ দিন ধরে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঠানো চিঠিগুলির প্রাপ্তিস্বীকার পর্যন্ত করা হয়নি। সর্বশেষ চিঠিটি পাঠানো হয়েছে পাঁচ দিন আগে। অপমানিত বোধ করছি আমরা। আমাদের দাবি, ১৯৪৭-এর ১৫ অগস্ট যেমনটি ছিল, সেই মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হোক আমাদের।’’
রাহুলও জানান, প্রাক্তন সেনাকর্মীদের অমর্যাদা, ক্ষোভ আর হতাশায় তিনি ব্যথিত। তার কথায়, ‘‘এঁরা হয়তো আপনাদের প্রকাশ্যে সবটুকু বলতে পারবেন না। কিন্তু বৈঠকে সবই বেরিয়ে এসেছিল।’’ গহলৌতও পরে ওই বৈঠকের ছবি দিয়ে টুইট করেন।
গত কালই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রধান মুখপাত্র স্বর্ণশ্রী রাও রাজশেখর প্রাক্তন নৌসেনাধ্যক্ষের উদ্দেশে এমন টুইট করেছেন যে বিড়ম্বনা সামলাতে তড়িঘড়ি তাঁকে ছুটিতে পাঠাতে হয়েছে সরকারকে। গোটা ঘটনায় প্রাক্তন সেনারা অনেকেই যথেষ্ট অপমানিত বোধ করছেন। পর দিনই রাহুলের এই প্রাক্তন সেনাদের পাশে থাকার বার্তা রাজনৈতিক ভাবেও বিজেপির কাছে অস্বস্তির।