মনোননয়ন জমা দেওয়ার আগে রোড শোয়ে রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা ও রবার্ট বঢরা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
কেরলের ওয়েনাডের পর এ বার উত্তরপ্রদেশের অমেঠি। বুধবার দ্বিতীয় মনোনয়নপত্র জমা দিলেন রাহুল গাঁধী। মনোনয়নের আগে অমেঠীর সদর শহর গৌরীগঞ্জে রোড শো করেন কংগ্রেস সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন মা সনিয়া গাঁধী। এছাড়া ছেলে রায়হান এবং মেয়ে মিরায়াকে নিয়ে রোড শো-তে ছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী এবং রবার্ট বঢরাও। মনোনয়ন ঘিরে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ছিল ব্যাপক উন্মাদনা।
২০০৪ সাল থেকে অমেঠীতে টানা তিন বারের সাংসদ রাহুল গাঁধী। এ বারও যে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হবেন রাহুল, তাতে কোনও চমক ছিল না। যেটা ছিল ওয়েনাড কেন্দ্রে তাঁর প্রার্থী হওয়া। গত সপ্তাহেই ওয়েনাডে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। সেখানেও মনোনয়নের আগে বিশাল রোড শো করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা রাহুল। আর বুধবার কার্যত গোটা পরিবারই মনোনয়ন পর্বে হাজির ছিলেন।
গৌরীগঞ্জে হুড খোলা গাড়িতে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার রোড শো-য়ে এ দিন শুরু থেকেই ছিল ব্যাপক জন সমাগম। সঙ্গে ছিল কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের বিশাল মিছিল। এ ছাড়া রাস্তার দু’পাশে বাড়ি থেকেও ফুল ছুড়ে রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানান বহু মানুষ। তবে ওই গাড়িতে ছিলেন না সনিয়া গাঁধী। পরে জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় রাহুল-প্রিয়ঙ্কা-রবার্টের সঙ্গে যোগ দেন তিনি।
আরও পডু়ন: অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে মোদীকে সমর্থন! কংগ্রেস নয়, বিজেপি এলেই কাশ্মীর জট খুলবে, বললেন ইমরান
আরও পডু়ন: ফাঁস হওয়া নথি পেশ করা যাবে আদালতে, রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা কেন্দ্রের
২০১৪ সালে রাহুলের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছিল স্মৃতি ইরানিকে। প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার ভোটে হেরেছিলেন স্মৃতি। পরে অবশ্য তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করে বিজেপি। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এ বারও রাহুলের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী স্মৃতিই। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশে এ বার জোট করে লড়ছে বহুজন সমাজ পার্টি এবং এবং সমাজবাদী পার্টি। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে মায়াবতী-অখিলেশের জোট অমেঠী কেন্দ্রে প্রার্থীও দেয়নি। ফলে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার রাহুল-স্মৃতির মুখোমুখি লড়াই। স্মৃতি মনোনয়ন জমা দেবেন আগামিকাল বৃহস্পতিবার।
হিন্দি বলয়ে কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি উত্তরপ্রদেশের অমেঠি। কংগ্রেসের পারিবারিক কেন্দ্রও বলা যায়। ১৯৮০ সালে এই কেন্দ্রে ভোটে জিতে নেহরু-গাঁধী পরিবারের প্রথম সদস্য সঞ্জয় গাঁধী সাংসদ হন। তবে ওই বছরই বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হলে পরের বছর উপনির্বাচনে জয়ী হন দাদা রাজীব গাঁধী। ১৯৯১ সালে নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি টানা সাংসদ ছিলেন এই কেন্দ্র থেকেই। মাঝে ৮ বছর বাদ দিয়ে ১৯৯৯ সালে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হন সনিয়া গাঁধী। পর পর দু’বার সাংসদ থাকার পর ছেলে রাহুলের জন্য ওই কেন্দ্র ছেড়ে দেন এবং নিজে প্রার্থী হন রায়বরেলী থেকে। তার পর থেকেই এই আসন থেকে জিতে আসছেন রাহুল।