পটনার সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
বিহারে লোকসভা ভোটের প্রচারের ঢাকে কাঠি দিলেন নরেন্দ্র মোদী। পোশাকি নাম এনডিএ-র ‘সংকল্প যাত্রা’। নীতীশ-রামবিলাসকে পাশে নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষে বিঁধলেন ভারতীয় বায়ু সেনার হামলা নিয়ে। পাকিস্তানের মাটিতে ওই হামলা এবং তাতে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তার প্রমাণ চেয়েছিল বিরোধীরা। এ নিয়ে মোদীর তির, ‘‘পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন বিরোধীরা, তাতে সেনা বাহিনীর মনোবল ভাঙছে।’’ সংকল্প যাত্রায় ভিড় নিয়ে পাল্টা লালুপ্রসাদ যাদবের খোঁচা, ‘‘এই লোকসমাগম তো আমি পানের দোকানেও করে ফেলতে পারি।’’
পুলওয়ামা হামলা এবং তার পরবর্তী ভারতীয় বায়ুসেনার হামলা এবং অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতে ফিরিয়ে আনা— বিজেপি তখা মোদী এই ত্রিফলাকে ভোটে হাতিয়ার করবেন, তা আগেও বোঝা গিয়েছিল। রবিবার পটনায় সংকল্প র্যালিতে সেই সুর আরও চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ু সেনা। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়, ওই হামলায় বহু জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে এবং অন্তত ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কিন্তু তার প্রমাণ কই? ওই হামলা নিয়ে এমনই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। মোদী সরকার যখন এই ইস্যুতে প্রবল জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে ভোটে যেতে চাইছে, তখনই বিরোধীদের এই প্রশ্নে কিছুটা অস্বস্তি ছিল। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা সেই জাতীয়তাবাদের অস্ত্রেই প্রধানমন্ত্রী ঘায়েল করতে চেয়েছেন বিরোধীদের। মোদী আগেও বলেছেন। ‘সঙ্কল্প যাত্রা’য় কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতাদের উদ্দেশে ফের বললেন, ‘‘ওরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চেয়েছিল। আর এখন বায়ু সেনার হামলারও প্রমাণ চাইছে। কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলগুলির কাছে আমি জানতে চাই, কেন তারা সেনার মনোবলে ফাটল ধরাচ্ছে। কেন কংগ্রেস এমন বিবৃতি দিচ্ছে, যাতে ভারত বিরোধী শক্তির হাতই আরও শক্ত হচ্ছে। পাকিস্তানের মাটিতে সস্ত্রাস দূর করতে যখন আমাদের সবার একজোট হওয়া দরকার, তখনই ২১টি দল আমাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে এক জোট হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ভারতীয় ভেবে পাকিস্তানি পাইলটকেই পিটিয়ে খুন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে!
বিরোধীদের এই বক্তব্য পাকিস্তানে ‘উচ্ছ্বিসত প্রশংসা’ পাচ্ছে মন্তব্য করে মোদী আরও বলেন, ‘‘ওরা চাইছে মোদীকে শেষ করতে, আর আমি চাইছি সন্ত্রাসবাদ ধ্বংস করতে।’’
আসন্ন লোকসভা ভোটে বিহারে এ বার কার্যত দ্বিমুখী লড়াই হচ্ছে। এনডিএ জোটে শামিল নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) এবং রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)। বিপরীত মেরুতে কংগ্রেস এবং লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি)। এ দিনের সংকল্প র্যালিতে বিহারের দুই দলের নেতাই ছিলেন। বিপুল জনসমাগমও হয়েছিল বলে দাবি বিজেপি এবং বিহার সরকার। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, মোদী-নীতীশের জনসভায় তেমন লোকই হয়নি।
আরও পডু়ন: ‘আর ৭৩ সিলেক্টেড’, পাক যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করার আগে এই বার্তাই দিয়েছিলেন অভিনন্দন
লালুপ্রসাদ যেমন টুইট করে এ নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন মোদীকে। নরেন্দ্র মোদী, উদ্দেশ্য করে তার মন্তব্য, ‘‘সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করে মোদী-নীতীশ-পাসোয়ানরা কয়েক মাস ধরে ব্যাপক খেটেছেন এই সভা সফল করার জন্য। এমন সমাবেশ আমি রাস্তার ধারের পানের দোকানেও জড়ো করে ফেলতে পারি।’’ যদিও লালুপ্রসাদের এই উক্তি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি শাসক দলের কোনও নেতা-মন্ত্রী।
ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।