Lok Sabha Election 2019

গেরুয়া সন্ত্রাস প্রশ্নে কংগ্রেসকে জবাব দিতেই প্রার্থী করা হয়েছে সাধ্বীকে: মোদী

মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় ‘মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম’ আইন থেকে যদিও রেহাই পেয়েছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। কিন্তু খুন, খুনের চক্রান্ত, দাঙ্গার চক্রান্ত,সাম্প্রদায়িক হিংসা ও সন্ত্রাসের মতো অভিযোগে এখনও মামলা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৩৬
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

ধর্মযুদ্ধে নেমেছেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর। এ বার প্রজ্ঞার সেই বক্তব্যকে সমর্থন করতে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।

Advertisement

শুক্রবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাত্কার দেন মোদী। সেখানে মালেগাওঁ বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞার সমর্থনে মুখ খোলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচ হাজার বছরের পুরনো হিন্দু সংস্কৃতির গায়ে যাঁরা সন্ত্রাসী তকমা সেঁটে দিয়েছিলেন, সাধ্বী প্রজ্ঞাকে প্রার্থী করে তাঁদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া গিয়েছে।’’গেরুয়া সন্ত্রাস নিয়ে সরব হওয়া কংগ্রেসকে তাদের কৃতকর্মের চরম মূল্য চোকাতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় ‘মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অর্গানাইজড ক্রাইম’ আইন থেকে যদিও রেহাই পেয়েছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। কিন্তু খুন, খুনের চক্রান্ত, দাঙ্গার চক্রান্ত,সাম্প্রদায়িক হিংসা ও সন্ত্রাসের মতো অভিযোগে এখনও মামলা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে। সমঝোতা এক্সপ্রেস বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনাতেও তাঁর যুক্ত থাকার ইঙ্গিত মিলেছিল আদালতে। এই দুই ঘটনার পরইগেরুয়া সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয়েছিল কংগ্রেস, যার অন্যতম মুখ হয়ে দাঁড়ান সাধ্বী প্রজ্ঞা।

Advertisement

আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত খোদ প্রধান বিচারপতি, বড় ষড়যন্ত্র, বললেন রঞ্জন গগৈ​

চলতি সপ্তাহে ভোপাল থেকে সাধ্বী প্রজ্ঞাকে প্র্রার্থী ঘোষণা করে বিজেপি। তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গেরুয়া সন্ত্রাসের বিষয়টি কংগ্রেসের মস্তিষ্কপ্রসূত। হিন্দু সংস্কৃতির অবমাননা করেছে তারা। তিনি বলেন, ‘‘সমঝোতা বিস্ফোরণ কাণ্ডের রায়ে তেমন কিছুই উঠে আসেনি। অথচ কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাঁচ হাজার বছরের পুরনো হিন্দু সংস্কৃতি, যা কিনা সমগ্র মানবজাতিকে একটি পরিবার হিসাবে দেখার বার্তা দেয়, তার গায়ে সন্ত্রাসী তকমা সেঁটে দিয়েছিল কিছু লোক। তাদের জবাব হিসাবেই ভোপাল থেকে প্রার্থী করা হয়েছে সাধ্বী প্রজ্ঞাকে। কৃতকর্মেরচরম মূল্য চোকাতে হবে কংগ্রেসকে।’’

১৯৮৪-তে ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পর শিখ বিরোধী দাঙ্গায় তেতে উঠেছিল গোটা দেশ। তাতে মধ্যপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ-সহ নাম জড়িয়েছিল বেশ কিছু কংগ্রেস নেতারও। তাঁদের কেন সন্ত্রাসবাদী বলা হচ্ছেনা, সেই প্রশ্নও তোলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘মায়ের মৃত্যুর পর রাজীব গাঁধী বলেছিলেন একটা বড় গাছ উপড়ে পড়লে, পৃথিবী কেঁপে ওঠে। যার পর দিল্লিতে কয়েক হাজার শিখকে হত্যা করা হয়েছিল। সেটা কিকিছু লোকের চালানো সন্ত্রাস ছিল না? তার পরেও রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে আবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়া নেতাদের জেলে আরামে রাখা হয়েছিল। এর পরে কি কংগ্রেসের প্রশ্ন তোলা সাজে? এখন যে সমস্ত সংবাদমাধ্যম নিজেদের নিরপেক্ষ বলে দাবি করছে, কই তখন তো প্রশ্ন তোলেনি তারা? তাদের যত প্রশ্ন এখনই?’’

সন্ত্রাস মামলায় জামিনে মুক্ত সাধ্বীকে প্রার্থী করা নিয়েও অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। মুখে জঙ্গি নিকেশের কথা বললেও, সন্ত্রাসে অভিযুক্তকে মোদী টিকিট পাইয়ে দিচ্ছেন বলে সমালোচনায় সরব হয় কংগ্রেসও। কিন্তু এ নিয়ে তাদেরই পাল্টা আক্রমণ করেন মোদী। তাঁর যুক্তি, ‘‘দুর্নীতি মামলায় জামিন পাওয়া রাহুল গাঁধীকে অমেঠীতে এবং সনিয়া গাঁধীকে রায়বরেলীতে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। কই তাঁদের নিয়ে তো বিতর্ক হচ্ছে না? শুধুমাত্র জামিনে মুক্ত ভোপালের প্রার্থীকে নিয়ে এত সমস্যা কেন? এমন দ্বিচারিতা কি চলতে দেওয়া যায়?’’

আরও পড়ুন: হাতে মোটে ১৫ টাকা, হলফনামায় দাবি তৃণমূল প্রার্থী অপরূপার​

২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময় সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেইসময় কেন্দ্রে অটলবিহারীবাজপেয়ীর সরকার। গোটা ঘটনায় মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু এ সবই কংগ্রেসের সাজানো বলে অভিযোগ মোদীর। তিনি বলেন, ‘‘আমি গুজরাতে থেকেছি। কংগ্রেসের ‘মোডাস অপারেন্ডি’ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সিনেমার মতো চিত্রনাট্য লিখে বেড়ায় ওরা। কোথাও কিছু চোখে পড়লেই হল, ভিলেন, নায়ক ঠিক করে ফেলে ওরা। তাদের নিয়ে ছবি তৈরি করে ফেলে। ওদের কাজই এই।’’

ইশরত জাহান, সোহরাবউদ্দিন ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় নাম জড়িয়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। সোহরাবউদ্দিন মামলার আবার শুনানি করছিলেন বিচারপতি বিএইচ লোয়া। ২০১৪-র ১ ডিসেম্বর তাঁর রহস্য মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর দাবি, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে সব এনকাউন্টারগুলিকে ভুয়ো বলে তুলে ধরেছে কংগ্রেস। স্বাভাবিক মৃত্যু হয় বিচারপতি লোয়ার। সেটাকেও এমন ভাবে তুলে ধরেছে কংগ্রেস, দেখলে মনে হবে তিনি খুন হয়েছেন বোধহয়। এখন ইভিএম এবং নোটবন্দি নিয়েও একই পথে হাঁটছে তারা।’’

(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement