Lok Sabha Election 2019

কুম্ভ-দোষারোপ নেহরুকে, প্রশ্ন মোদীর মন্তব্যে

প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সে বার। কিন্তু তখনকার সংবাদমাধ্যমও নেহরু সরকারের পাশে দাঁড়াতে খবর গোপন করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৯ ০১:৫৩
Share:

নেতা: উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের এক নির্বাচনী সভায় রাহুল গাঁধী। রয়েছেন ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী কৈসর জহানও। বুধবার। ছবি: পিটিআই

উত্তরপ্রদেশে ভোটের প্রচারে গিয়ে এ বার কুম্ভমেলাও টেনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মেলা নিয়ন্ত্রণে নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করতে গিয়ে বিঁধলেন কংগ্রেস আমলকে। উস্কে দিলেন ১৯৫৪-য় প্রয়াগ কুম্ভের সেই কুখ্যাত পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা। আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু নিজের সরকার বাঁচাতে সেই দুর্ঘটনার কথা বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন বলেও আজ কৌশাম্বীর সভায় অভিযোগ করলেন মোদী।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সে বার। কিন্তু তখনকার সংবাদমাধ্যমও নেহরু সরকারের পাশে দাঁড়াতে খবর গোপন করেছিল। মোদীর কথায়, ‘‘পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের নাম কোনও দিন জানানো হয়নি তাঁদের পরিবারকে। কানাকড়িও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।’’ বিষয়টিকে ‘চূড়ান্ত অংসবেদনশীল’ বলে উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘‘পাপ করেছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।’’

কিন্তু সত্যিই কি তাই? কুম্ভমেলার ওই দুর্ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যুর খবর গোপন করা কি সত্যিই সম্ভব— মোদীর দাবি ঘিরে সেই প্রশ্নটাই তুলে দিলেন অনেকে। বাস্তব হল, সংসদে এই দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। নেহরু সরকার এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে কুম্ভমেলায় কী কী করণীয়, তার একটা দিশা নির্দেশও করেছিল সেই কমিটি। মেলায় সেক্টর ভাগ, প্রতি সেক্টরে দমকল-পুলিশ, যাতায়াতের আলাদা আলাদা পথ, দু’টি আখড়ার মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব— দুর্ঘটনার পরে নেহরু আমলে তৈরি হওয়া সেই ট্র্যাডিশন এখনও চলছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাই মেলা নিয়ন্ত্রণে মোদীর কৃতিত্ব দাবি ভিত্তিহীন বলেই তাঁদের দাবি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মতো কমিশন যে তখন তৈরি হয়নি, সেটা ঠিক— মানছেন সেই সময়কার সাংবাদিক মহলের একটা বড় অংশ। কিন্তু মোদী যে সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও আঙুল তুললেন! সেটাও সম্পূর্ণ অবান্তর বলে দাবি তাঁদের। স্বাধীনতার পরে প্রয়াগে সেটাই ছিল প্রথম পূর্ণকুম্ভ।

১৯৫৪-য় দেশে এত সংবাদমাধ্যম ছিল না। কিন্তু শাহি স্নানের দিন ওই দুর্ঘটনার রিপোর্ট সে বার ইলাহাবাদের প্রতিটি কাগজেই বেরিয়েছিল। রেডিয়োতেও খবর সম্প্রচার হয়েছিল। ইলাহাবাদের কাগজ ‘লিডার’-এ কুম্ভের এই দুর্ঘটনা নিয়ে দিনের পর দিন লেখালিখি হয়েছে বলেও মনে করাচ্ছেন তাঁরা।

আর? আর ওই দুর্ঘটনার কথা আছে সাহিত্যেও। যেমন, কালকূটের ‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’ কিংবা বিক্রম শেঠের ‘আ সুটেবল বয়’। এর পরেও মোদী কী ভাবে খবর চেপে যাওয়ার কথা বলেন, তাতেই বিস্মিত অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement