বিয়ে হয়েছে কাজের সঙ্গে, সলাজ রাহুল

শুক্রবার পুণেয় এক ঝাঁক তরুণ ছাত্রছাত্রী ফের ঘুরিয়ে সেই বাউন্সারই দিলেন কংগ্রেস সভাপতিকে। প্রশ্নটা এল এই ভাবে— ‘‘নরেন্দ্র মোদীর মতো আপনার জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র হলে নায়িকা কে হবেন?’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পুণে শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

রাখি দেখিয়ে: ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বোন প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা বোঝাচ্ছেন রাহুল গাঁধী। শুক্রবার পুণেয়। পিটিআই

গত বছর হায়দরাবাদে হালকা মেজাজে থাকা রাহুল গাঁধীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘কবে বিয়ে করছেন?’’ আচমকা আসা সেই বাউন্সার বলটি মাথা নিচু করে ছেড়ে দিতে রাজীব তনয়ের জবাব ছিল— ‘‘কংগ্রেস পার্টির সঙ্গেই আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে!’’

Advertisement

শুক্রবার পুণেয় এক ঝাঁক তরুণ ছাত্রছাত্রী ফের ঘুরিয়ে সেই বাউন্সারই দিলেন কংগ্রেস সভাপতিকে। প্রশ্নটা এল এই ভাবে— ‘‘নরেন্দ্র মোদীর মতো আপনার জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র হলে নায়িকা কে হবেন?’’ এ বারও সেই একই টেকনিক রাহুলের। লাজুক

হেসে বললেন, ‘‘কাজকেই বিয়ে করেছি আমি!’’

Advertisement

ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে রাহুলের কথোপকথন সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন নামী রেডিয়ো জকি মালিস্কা। কংগ্রেসের তরুণ সভাপতিকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন ‘‘রাখি বন্ধন পালন করেন?’’ জবাবে ডান হাত তুলে কব্জি দেখালেন রাহুল, এখনও যেখানে বাঁধা রয়েছে প্রিয়ঙ্কার পরানো রাখি। বললেন, ‘‘বোন রাখি পরানোর পরে যত ক্ষণ না সেটা নিজে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আমি খুলি না সেটা।’’ তার আগেই জানিয়েছেন রাহুল, ‘‘আমার সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমার বোন। সব চেয়ে প্রিয় বন্ধুও।’’ উড়ে এসেছিল প্রশ্ন— ভাইবোনে লড়াই-ঝগড়া হয় না? কপাল কুঁচকে একটু ভেবে রাহুলের জবাব— ‘‘ছোটবেলায় হতো। এখন আর হয় না।’’ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘আসলে লড়াই-ঝগড়া একেবারেই আসে না আমার। ছোটবেলা থেকে এত হিংসার শিকার হতে হয়েছে— ঠাকুরমাকে হারিয়েছি, বাবাকে খুন হতে দেখেছি!’’ প্রেক্ষাগৃহ তখন স্তব্ধ। রাহুলই নীরবতা ভেঙে বললেন, ‘‘তবে ভাইবোনে ঠোক্কর কী আর লাগে না? বড় দিদি তো, তাই অধিকাংশ সময়ে সে-ই পিছিয়ে যায়, কখনও আমি। কিন্তু আমরা বন্ধু, আর সারাটা জীবন বন্ধুই থাকব।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ঠাকুরমার কথা মনে পড়ে? এই প্রশ্নের জবাবে হেসে ওঠেন রাহুল। বলেন, ‘‘ছোটবেলায় ঠাকুরমাকে চমকে দিতে তাঁর ঘরে পর্দার পিছনে লুকিয়ে থাকতাম। উনি ঠিকই জানতেন আমি ঘরে ওই ভাবে রয়েছি। কিন্তু তার পরেও চমকে উঠে আমাকে খুশি করতেন ঠাকুমা!’’

শুধু পরিবারের গল্প নয়, নির্বাচনের মুখে নতুন ভোটারদের কাছে প্রচারের কাজটাও সেরে নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। একের পর এক আঘাত করে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করে দিচ্ছে, এই অভিযোগ এনেছেন। মোদী সরকারকে আক্রমণ করে দাবি করেছেন, ‘‘নোটবন্দি একটি ভয়ানক পদক্ষেপ! ২০১৬-এ এই ঘোষণার পরে দেশের জিডিপি দুই শতাংশ কমেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়েছেন।’’ কংগ্রেসের ইস্তাহারকে গরিব ও সাধারণ মানুষের ইস্তাহার আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ন্যূনতম আয় যোজনা বা ‘ন্যায়’ দেশের অর্থনীতিকে বদলে দেবে। আর এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তাঁর সরকার যে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে আদায় করবে না, সেই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথাও দিয়েছেন।

ওয়েনাড থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে টুইটে রাহুলকে তাঁর জানা সব চেয়ে সাহসী মানুষ বলেছেন প্রিয়ঙ্কা। এক ছাত্রীর প্রশ্ন— কী ভাবে এই সাহস আর আত্মবিশ্বাস তিনি পান? দার্শনিক জবাব দেন রাহুল, ‘‘অভিজ্ঞতা থেকে সাহস আসে। কী আমি মোকাবিলা করছি আর কী গ্রহণ করছি, সাহস আসে তা থেকে। তুমি যদি সত্যকে গ্রহণ করো, সাহসী হবে। আর মিথ্যাকে গ্রহণ করলে ভয়ে ভয়েই জীবন কাটাতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement