গত কয়েকটি ভোটে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হয়েছিল ‘ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেইলিং’ বা ভিভিপ্যাট। কিন্তু সব ইভিএম-এ ছিল না ভিভিপ্যাট। সার্বিক ভাবে লোকসভা ভোটে সব ইভিএম-এ ভিভিপ্যাট ব্যবহার হচ্ছে এই প্রথম। ভিভিপ্যাট কী?
মূলত ভোটযন্ত্রে কারচুপি বা তা ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা সহজেই ধরা যাবে এটির মাধ্যমে, বলা হচ্ছে এমনটাই। কী ভাবে কাজ করে এটি?
সঠিক ব্যক্তির ভোটদান নিশ্চিত করে এই ভিভিপ্যাট। এটিকে দ্বিতীয় ধাপের পর্যবেক্ষণও বলা যেতে পারে। ইলেকট্রনিক ভোটমেশিন বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় ভিভিপ্যাট।
এটিতে একটি প্রিন্টার থাকে, যেটি ভোটারদের মনোনীত প্রার্থীদের রেকর্ড রাখে। ডিসপ্লে ইউনিট দেখায় কোনও ভুল হয়েছে কি না। এ ছাড়াও ভিভিপ্যাটে প্রার্থীর সিরিয়াল নম্বর, নাম, সংশ্লিষ্ট প্রতীক থাকে।
এটি ইভিএম-এর সঙ্গে যোগ করা আলাদা একটি যন্ত্র। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর ওই যন্ত্র থেকে একটি স্লিপ বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ ভোটার যাঁকে ভোট দিলেন, সেটি ঠিকঠাক জায়গায় পড়েছে কি না, তা যাচাই করে নেওয়া যাবে ওই স্লিপ থেকে।
ভোটযন্ত্রে পছন্দের প্রার্থীর নামে বোতাম টিপলেই স্লিপটি স্বনিয়ন্ত্রিতভাবে সিল করা বাক্সে জমা পড়ে। ভোটদাতা নিজেও দেখে নিতে পারেন, সঠিক ভোট প্রয়োগ করেছেন কি না। তবে সেটি হাতে নেওয়া যাবে না।
স্বচ্ছ একটি কাচের ভিতর দিয়ে মাত্র সাত সেকেন্ডের জন্য স্লিপটি ভোটদাতা দেখতে পারেন। এর পর এটি কেটে স্টোরেজ বক্সে জমা হয়। একটা বিপ শব্দ হয়। তার পর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাতেই সেটি পড়ে যাবে নীচে রাখা নির্দিষ্ট বাক্সে।
কেউ ভোটযন্ত্রের বোতামে চাপ দিলে সঙ্গে সঙ্গে একটি স্লিপ বার হয়ে পাশের বাক্সে জমা হয়ে যাবে। তাতে লেখা দেখে বোঝা যাবে ভোটগ্রহণ ঠিকমতো হয়েছে কি না। অনেকটা এটিএম মেশিনের মতোই ওই স্লিপে ভোট ঠিকমতো জমা পড়লে বা না পড়লেও জানা যাবে।
ভোটারের ক্ষেত্রে যেমন যাচাই করা সুবিধা হবে, তেমনই গণনার সময়ও ইভিএমের ফলাফল এবং ভিভিপ্যাটের স্লিপ মিলিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎকোন দল কত ভোট পেল, সেটা ইভিএম এ দেখাবে। তার পর ভিভিপ্যাটের স্লিপেও সেই সংখ্যা মিলছে কি না, তা দ্বিতীয়বার নিশ্চিত করা যাবে এই পদ্ধতিতে।
২০০১ সালে নিউ ইয়র্কে প্রথম এই পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হয়। এর ফলে বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ভোটের শেষে মিলিয়ে নিতে পারবেন, ক’টা প্রকৃত ভোট হয়েছে আর ক’টা ভোট জমা পড়েনি। এতে অনেক ক্ষেত্রেই পুনর্নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়া যায়, বলছেন বিশেষজ্ঞরাই।
নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে ভিভিপ্যাটের ব্যবহার করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এটি প্রয়োগ করা হয়।কিছু দফায় ব্যবহার করা হয়েছিল। সব ক্ষেত্রে নয়।